বাংলার পাঁচ জেলায় মাটির নীচে বিপুল পরিমাণ তেল এবং গ্যাসের হদিশ মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে তেল তোলার কাজ। এবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওএনজিসি। ওই জেলাগুলিতে তারা ২২টি জায়গা চিহ্নিত করেছে। সেখানে চলছে খননের কাজের তোড়জোড়। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এসব জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে তেল এবং গ্যাস উত্তোলন শুরু করতে কতদিন সময় লাগবে? সেটারও একটি ধারণা পাওয়া যাবে ‘ড্রিল সাইট’ থেকে।
কোন জেলাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে? উপগ্রহ চিত্র থেকে বাংলার পাঁচটি জেলায় মাটির নীচে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাসের হদিশ মিলেছে। এই পাঁচটি জেলা হল উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব–পশ্চিম মেদিনীপুর এবং নদিয়া। এই পাঁচটি জেলার আবার ২২টি জায়গা ওএনজিসি চিহ্নিত করেছে। যেখানে খনন চালানো হবে। এই কাজের জন্য জমি চিহ্নিত করা সম্পূর্ণ হয়েছে। ওএনজিসি সূত্রে খবর, প্রত্যেকটি সাইটের জন্য গড়ে প্রায় পাঁচ একর জমি লিজে নেওয়া হবে। ভূগর্ভে আড়াই হাজার থেকে ছ’ হাজার মিটারের মধ্যে তেল–গ্যাসের ভাণ্ডারের অবস্থা যাচাই করবেন বিশেষজ্ঞরা। সব ঠিক থাকলে দ্রুত ওই এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করে বাণিজ্যিকভাবে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? আসানসোল এবং দুর্গাপুরে বিপুল পরিমাণে মজুত রয়েছে কোলবেড মিথেন। তাই ওএনজিসি কর্তারা জানাচ্ছেন, স্বাধীনতার পরবর্তী ভারতে বাংলার কয়লা ও পাট শিল্পক্ষেত্রে জোয়ার এনেছিল। আগামী দিনে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের হাত ধরে এই রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমূল বদলে যেতে পারে। ২০২০ সালে অশোকনগরের বাইগাছিতে কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বাণিজ্যিকভাবে তেল ও গ্যাস উত্তোলনের সূচনা করেন। তারপর থেকে ওএনজিসি বাংলাজুড়ে জোরকদমে অনুসন্ধান শুরু করে। উত্তর ২৪ পরগনায় বাইগাছিকে কেন্দ্র করে নানা জায়গায় তেলের হদিশ মিলেছে।
সেই নানা জায়গাগুলি কোথায়? যে পাঁচটি জেলার মাটির নীচে হদিশ মিলেছে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সেগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই জায়গাগুলি হল— ভুরকুণ্ডা, দিগড়া মালিকবেড়িয়া এবং বনগাঁর আকাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামদেবপুর এলাকায় জমি লিজে নিয়ে খননের কাজ শেষের দিকে। এখন দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের কিসমত খাটিয়াল ও পদ্মাতামালিতে জমি লিজে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।