কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার জেরে ইতিমধ্য়েই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে একটা প্রশ্ন বার বার করেই উঠছে মালগাড়ির চালক কেন এভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার পেছনে এসে ধাক্কা দিলেন? গোটা ঘটনায় একাধিক বিষয় ক্রমশ সামনে আসছে। সেখানেই উঠে আসছে কীভাবে দিনের পর দিন ধরে চালকদের কাজের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এবার অভিযোগ উঠছে একজন চালককে পরপর তিনদিন পর্যন্ত নাইট করতে হত। মূলত লোকো পাইলটের অভাব থাকার জন্যই তাঁকে বাড়়তি চাপ নিতে হত। এদিকে রেলওয়ে সেফটি গাইড অনুসারে ২ দিন নাইট ডিউটি দেওয়ার পরে একদিন তাঁদের রেস্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে সেই বিশ্রামের সময়টাও তাঁরা যথাযথ পেতেন না। এক্ষেত্রে ট্রেন চালানোর সময় যদি ঘুম এসে যায় তবে তার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।
এদিকে জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে দুর্ঘটনার দিন মালগাড়ির চালকও টানা ৩ দিন নাইট ডিউটি করেছিলেন। তারপর দিন তাঁর আবার ডিউটি ছিল। সেক্ষেত্রে এবার সেই চালকের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যায়।
সোমবার এনজেপি থেকে বের হওয়ার পরে রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা ঘটে। পেছন থেকে এসে ধাক্কা দেয় মালগাড়ি। এই দুর্ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে মালগাড়ির চালক মৃত অনিল কুমারকেই দায়ী করেছে রেল। মালগাড়ি চালক সিগনাল না মানার জন্যই এই দুর্ঘটনা বলে দাবি রেলের।দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন চালক অনিল কুমার।
এমনকী তাঁর পরিবারের তরফেও এনিয়ে আগেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মৃত চালকের শ্যালক অমিত কুমার বলেছেন, ‘এটি খুবই মর্মান্তিক এবং আমাদের কাছে তা প্রকাশ করার মতো কোনও শব্দ নেই। আমরা পরিবারের সকলেই শোকস্তব্ধ। রেল যেভাবে অনিলকে দায়ী করেছে তা জানার পরে আমরা বিস্মিত। পুরো দুর্ঘটনার জন্য কীভাবে তদন্ত না করেই একজনকে দায়ী করা হল? কেন তাঁর স্ত্রী-সন্তানরা এই অভিযোগ নিয়ে বাঁচবে? এনিয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছেন তারা।
এদিকে দুর্ঘটনার পরেই লোকো পাইলটের ঘাটতি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে ফের নাড়াচাড়া করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দ্রুত লোকো পাইলট নিয়োগের উপর জোর দিচ্ছে রেল। তবে প্রশ্ন উঠছে শুধু মালগাড়ির চালকের উপর দায় চাপানো কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।