ভালোবাসার বিশেষ দিনটি শুরু হওয়ার আগেই কি ভালোবাসার মানুষকে নৃশংসভাবে খুন? এই অভিযোগ উঠছে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির একটি রহস্যময় দেহ উদ্ধারের ঘটনায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিবাহ বহির্ভূত 'ভালোবাসা'য় জড়িয়েই খুন হতে হয়েছে ওই যুবককে! যাঁর দেহ উদ্ধার হয় ভালোবাসার দিনে!
শুক্রবার ভ্য়ালেন্টাইনস ডে। সেই উপলক্ষে প্রেমিক-প্রেমিকাদের পরস্পরের জন্য আয়োজনের শেষ নেই। আর এমনই একটি দিনে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে।
এদিন সকালে খেজুরির দক্ষিণ কলমদানের একটি মাংসের দোকান থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের নাম সুমন জানা। বয়স ৩০ বছর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সুমনই ওই মাংসের দোকানের মালিক। মাংসের দোকানে যেভাবে কাটা মাংস ঝুলিয়ে রাখা হয়, ঠিক সেভাবেই ঝুলিয়ে রাখাা হয়েছিল সুমনের দেহ!
এমন ঘটনা দেখে স্বাভাবিকভাবেই এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁদের একাংশের আশঙ্কা, প্রবল আক্রোশ থেকেই হয়তো সুমনকে খুন করে ওভাবে কাটা মাংসের মতো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে!
এদিকে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক মহিলাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। সুমন জানার পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকেই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক দাবি হল, সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সুমন। এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অশান্তি শুরু হয়।
পরিবারের সদস্যদের আরও দাবি, ইদানীং ওই মহিলা নাকি সুমনকে নানা ধরনের হুমকি, হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন। এমনকী তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন সুমনের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের আশঙ্কা, ওই মহিলাই নিজে অথবা কাউকে দিয়ে সুমনকে খুন করেছেন বা করিয়েছেন এবং তারপর প্রবল আক্রোশে তাঁর দেহ কাটা মাংসের মতো ঝুলিয়ে দিয়েছেন!
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই খেজুরি থানার হেঁড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন নিহত সুমন জানার পরিবারের সদস্যরা। তবে, তাঁরা যাই বলুন, পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে শুধুমাত্র জানা গিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পরিবারের সদস্যদের সমস্ত দাবি ও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, এখন পুলিশের কাছে সবথেকে জরুরি হল, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। সেটা হাতে এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ ও প্রকৃত সময় নিয়ে অন্তত নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রসঙ্গত, সুমনের ওই মাংসের দোকানটি পুলিশ 'সিল' করে দিয়েছে।