পাঁচ বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটে লাগামছাড়া হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। তা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে একদফাতেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানালেন, আগামী ৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। তবে ভোটগণনার দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগামী ১১ জুলাই ভোটগণনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার। তবে বিরোধীদের দাবি মতো নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘রাজ্য পুলিশের উপরই আস্থা রাখা উচিত।’
বুধবার রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব। নয়া পদে আসীন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার জানান, ৮ জুলাই রাজ্যের ২২ টি জেলায় পঞ্চায়েত ভোট হবে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ থেকেই আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হচ্ছে। আগামিকাল (৯ জুন) থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন হল ২০ জুন।
অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে? সব বুথে সিসিটিভি থাকবে?
রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, এবার অনলাইনে মনোনয়ন জমা নেওয়ার বিষয়ে আপাতত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে সেই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি বুথে সিসিটিভি থাকবে, সেটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনও তো সব বুথে সিসিটিভি রাখে না।
আরও পড়ুন: Talk to CM: এবার 'মুখ্যমন্ত্রীকে বলুন,' ফোন করে জানাতে পারবেন অভিযোগ, নম্বরটা দিলেন মমতা
এবার কি পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে?
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে লাগামছাড়া হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন জমা দিলেও তা প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে রক্ত বয়েছিল নির্বাচনের সময়। রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
সেই পরিস্থিতিতে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করার দাবি তুলে আসছেন বিরোধী নেতারা। যদিও আপাতত সেই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। রাজীব দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারবেন না। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্য পুলিশের উপরে আস্থা রাখা উচিত।’
আরও পড়ুন: ‘দু’চারটে পটকা বাজি ফাটবে না, কালীপুজো হবে?’, নতুন তত্ত্ব দিলেন মিত্র মদন
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের হাল-হকিকত
রাজ্যে মোট ২২ টি জেলায় ৩,৩১৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েত আছে। মোট পঞ্চায়েত আসনের সংখ্যা ৬৩,২৮৩। মোট নির্বাচন কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮,৫৯৪। নয়া নির্বাচন কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন, দার্জিলিং এবং কালিম্পং ছাড়া রাজ্যের সর্বত্র ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচন হবে। ওই দুটি জেলায় শুধু দ্বিস্তরীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)