কাঁচা ডিম দিতে রাজি না হওয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে উনুনে আঁচ ধরানোর চ্যালা কাঠ দিয়ে বেধড়ক পেটালেন এক পড়ুয়ার অভিভাবক! চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের গোপীপল্লবপুরে।
আক্রান্তের অভিযোগ কী?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, আক্রান্ত ওই মহিলার নাম মধুমিতা সুঁই দাস। তিনি গোপীবল্লভপুর এলাকারই বাসিন্দা। গোপীবল্লভপুর-১ নম্বর ব্লকের গোপীনাথপুর আইসিডিএস কেন্দ্রে কাজ করেন মধুমিতা।
তাঁর অভিযোগ, ওই আইসিডিএস কেন্দ্রেরই এক পড়ুয়ার বাবার হাতে মার খেতে হয়েছে তাঁকে। তাও কাঁচা ডিম না দেওয়ার 'অপরাধে'!
ঠিক কী ঘটেছিল?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, অন্য়ান্য দিনের মতোই গত শুক্রবারও আইসিডিএস কেন্দ্রের কাজে যোগ দিয়েছিলেন মধুমিতা। শিশুদের পড়াশোনা করানোর পাশাপাশি ব্যস্ত ছিলেন অন্যান্য দায়িত্ব সামাল দিতে।
অভিযোগ, সেই সময়েই সেখানে এক পড়ুয়ার বাবা এসে উপস্থিত হন। তিনি মধুমিতার কাছে কাঁচা ডিম চান। মধুমিতা তাঁকে জানান, বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য ডিম রয়েছে। সেই ডিম সিদ্ধ করতে বসানো হয়েছে। ডিম সিদ্ধ হয়ে গেলেই তা বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য বিতরণ করা হবে।
অভিযোগ, একথা শোনার পরও আগত ব্যক্তি কাঁচা ডিম দেওয়ার জন্য জোর করেন। কিন্তু, মধুমিতা তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কাঁচা ডিম কাউকে দেওয়াটা সরকারি নিয়ম নয়।
তাই তাঁর পক্ষে কাউকেই আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ কাঁচা ডিম দেওয়া সম্ভব নয়।
অভিযোগ, এরপরই মারমুখী হয়ে ওঠেন আগত ব্যক্তি। আইসিডিএস কেন্দ্রের যেখানে রান্নার কাজ চলছিল, সেখানেই জ্বালানির জন্য কাঠের টুকরো পড়েছিল।
সেই কাঠ তুলেই ওই ব্যক্তি মধুমিতাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। তাতে ওই অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীর মাথা, পিঠ ও তলপেটে গুরুতর চোট লাগে।
কেমন আছেন ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী?
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই ঘটনার জেরে অচৈতন্য হয়ে পড়েন মধুমিতা। পরে তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, তাঁর আঘাত গুরুতর হওয়ায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।
এরপর মধুমিতাকে শনিবার ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
এদিকে, এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন।
দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে গোপীবল্লভপুর থানা ও স্থানীয় প্রশাসনিক দফতরের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা।
এর পাশাপাশি, মধুমিতার স্বামীও এই ঘটনায় স্থানীয় গোপীবল্লভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।