এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে। এবার তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কোলাঘাটের অতনু গুছাইতের স্ত্রী মানসী গুছাইতকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করল তমলুক থানার পুলিশ। এই ঘটনা সামনে আসতেই বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে। গত এপ্রিল মাসে তমলুকের বাসিন্দা বিকাশ বেরা আদালতে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, অতনু গুছাইত, তার ভাই শান্তনু গুছাইত এবং অতনুর স্ত্রী মানসী গুছাইত দফায় দফায় তার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। এই টাকা নিয়েছেন তাঁদের বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাড়ি বিক্রির পুরো টাকা মিটিয়ে দিলেও, অতনু গুছাইত রেজিষ্ট্রেশন করছিলেন না। পরে বিকাশ বেরা জানতে পারেন, সমবায় ব্যাঙ্কের কোলাঘাট শাখায় বাড়িটি আগে থেকেই বন্ধক রয়েছে। এরপর টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বিকাশ অতনুদের চাপ দিলে তাঁকে মোট চারটি চেকে ৫০ লক্ষ টাকা ফেরত দেন অতনু। কিন্তু সেই চেকগুলি বাউন্স করে। তখন বিকাশবাবু আইনের দ্বারস্থ হয়।
কে এই মানসী গুছাইত? অতনু গুছাইতের স্ত্রী মানসী গুছাইত। তিনি পাঁশকুড়ার একটি হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষিকা। বরাবর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এমনকী শিক্ষা দফতরের বিষয়ে অনেক খবর রাখতেন তিনি। সেটি কাজে লাগাতেন মানসী দেবী বলে সূত্রের খবর। থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই মঙ্গলবার রাতে তিনি স্কুলে এলে তমলুক থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেন। আর্থিক প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ –সহ একাধিক ধারায় মানসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ, বুধবার তাঁকে তমলুক আদালতে তোলা হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এখনও স্কুল–পাঠ্যবইতে সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা রয়েছে। অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইতে ১৬৩ নম্বর পাতায় জ্বলজ্বল করছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। এখন অবশ্য তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে। এই পার্থবাবুর সঙ্গে বহুবার দেখা করেছেন মানসী গুছাইত। আর তিনিই টাকা নিয়ে বারবার ঘোরাচ্ছিলেন বিকাশ বেরাকে। বিকাশবাবুকে যে চেকগুলি দেওয়া হয়েছিল সেগুলি মানসী দেবীর অ্যাকাউন্টের। ফলে চেক বাউন্স ফৌজদারি অপরাধ। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে মানসী দেবীকে।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, অতনু–মানসী অনেকের সঙ্গেই প্রতারণা করেছেন। কিন্তু মহিলা বলে তাঁরা বেশিদূর এগোননি। কিন্তু বিকাশবাবু এতগুলি টাকা দিয়েছেন। বিনিময়ে বাড়ি থেকে শুরু করে টাকা কোনও কিছুই ফেরত পাননি। উলটে তাঁর সঙ্গে একের পর এক প্রতারণা হয়েছে। সেটি প্রমাণ হতেই গ্রেফতার করা হয়েছে মানসী গুছাইতকে। এরপর সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।