ভারী বৃষ্টি হয়েছিল তিন সপ্তাহ আগে। সেই জল জমে আছে এখনও। তার উপর ভাঙাচোরা রাস্তা। হাওড়া দাশনগরের কাশীপুর এখনও ডুবে রয়েছে জলের তলায়। রাস্তার এই বেহাল দশায় দুর্ভোগ বাড়ছে স্থানীয় মানুষের। শুক্রবার হাওড়ার তিনটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর নতুন চেয়ারপারসন সুজয় চক্রবর্তী। পুজোর আগেই হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে মাস্টার প্ল্যানের আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারপারসন।
এই নিয়ে গত কয়েকদিন আগেই প্রতিবাদে হাওড়া-আমতা রোড অবরোধ করেছিলেন স্থানীয়রা। রাস্তায় নামার পাশাপাশি বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মহিলারাও। শুক্রবার কাশীপুরের জলবন্দি এলাকাগুলোর পরিদর্শনে যান পুর কমিশনার ধবল জৈন ছাড়াও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে গিয়ে তারা দেখেন, দাশনগরের ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এখনও জলের তলায় তলিয়ে রয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগjs দেয় এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এলাকার নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা হয় না। পাম্প চললেও এক ইঞ্চিও জল নামে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই, হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যায়। রাস্তাজুড়ে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়ে আছে। হেঁটে যাতায়াত করাও দুরূহ হয়ে উঠেছে তাঁদের পক্ষে। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুকুর ও জলাজমি ভরাট করে প্রচুর বাড়ি তৈরি হয়েছে এখানে। তার ফলে নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বাসিন্দাদের অভাব অভিযোগ শোনার পর পুর ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করেন সুজয়। পরে তিনি জানান, সবচেয়ে আগে পাম্পের সাহায্যে জমে থাকা জল বের করা হবে। তারপর নিকাশি সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। পাশাপাশি জল জমে থাকায় যে সব রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পুজোর আগেই সেগুলো মেরামত করা হবে। চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, ওই তিনটি ওয়ার্ডের জমা জল বের করতে চারটি পাম্প চালানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হাওড়া শহরের নিকাশি সংস্কারের একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরির জন্য ইতিমধ্যে ৪ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার মাস্টারপ্ল্যানের বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে। তারা এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে যে, শহরে কোথায় কোথায় নিকাশির সমস্যা রয়েছে। সেই অনুযায়ী তারা একটি নকশা তৈরি করবে বলে জানা গিয়েছে। সেই নকশা অনুমোদন হলেই, তৈরি হবে মাস্টার প্ল্যান। পুর ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, হাওড়া নিকাশি সমস্যার সমাধান করতে গেলে, এটাই একমাত্র রাস্তা।