বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রী পরিষেবা শুরু হয়েছে। হাওড়া স্টেশন থেকে ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এই সেমি–হাইস্পিড ট্রেন। সময় লাগছে মাত্র সাড়ে ৭ ঘণ্টা। মাঝে বোলপুর, মালদা এবং বিহারের বরসোই স্টেশনে থামে। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে চালু হয়েছে হাওড়া–নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ৩০ ডিসেম্বর সুপারফাস্ট ট্রেনটির যাত্রার সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে ট্রায়াল রানও হয়। রবিবার প্রথম এই ট্রেন যাত্রী নিয়ে হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) পৌঁছয়। যাত্রীদের অনেকে প্রথম যাত্রার সঙ্গী হয়ে ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যাত্রার শেষে যাত্রীদের একটা বড় অংশ ট্রেনের খাবার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? রবিবার হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছনোর কথা থাকলেও তিন মিনিট দেরিতে পৌঁছয় ট্রেন। আর তারপর স্টেশনে নেমেই যাত্রীরা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত বুধবার ছাড়া ট্রেনটি চলবে সপ্তাহে ৬ দিন। টিকিটের চাহিদাও তুঙ্গে। ভোরে বাড়ি থেকে বেরোলে বিকেলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে শৈলশহর দার্জিলিংয়ে। সেখানে এমন অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে যাত্রীদের? এই ট্রেনে সফর করে পূর্ব মেদিনীপুরের রুমা দাস হাওড়া থেকে এনজেপি এসেছেন। তিনি বলেন, ‘ট্রেনটি এমনিতে ভাল। কিন্তু খাবারের মান ভাল ছিল না। দুপুরে ভাত, ডাল, চিকেন কষা নিয়েছিলাম। ভাত ও ডাল তো পুরো ঠান্ডা। শীতের মধ্যে সেই খাবার খাওয়া যাচ্ছিল না।’ আর এক যাত্রীর বক্তব্য, ‘এই ট্রেনে বাথরুমের ভিতরেই বেসিন। ওটা বাথরুমের বাইরে হলে ভাল হয়।’ হাওড়ার বাসিন্দা সপ্তর্ষি মুখোপাধ্যায় বন্দে ভারতের প্রথম যাত্রার পর বলেন, ‘ব্রেকফাস্টের লুচি ও আলুর দম, দুপুরের ভাত, ডাল এত ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল যে কষ্ট করে খেতে হয়েছে। খাবারের মান ভাল না করলে এই বন্দে ভারতের বদনাম হয়ে যাবে।’ কয়েকজন যাত্রী এক সুরে বলেন, ‘সময়ে চা দেওয়া হয়নি। খুবই পাতলা ডাল দিয়েছিল। তাও পুরোপুরি ঠান্ডা। খাবারের মান অবশ্যই ভাল করা উচিত।’ নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস রাতে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনোর পর, সেখানেও খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বহু যাত্রী।
ঠিক কী বক্তব্য রেলের? যাত্রীদের এই ক্ষোভের বিষয়টি নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘আমাদের কাছে লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ আসেনি। তেমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইআরসিটিসি’র কাছে জানতে চাইব। এই ধরনের ট্রেনে পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকুক, তা আমরা চাই না।’ তবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে একবার চোখের দেখা দেখতে বোলপুর, মালদা এবং এনজেপি স্টেশনে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু মানুষ।