পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে এবার নয়া মোড়। তবে এমনটা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করেননি। প্রাক্তন পুলিশ অফিসারই এই পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে জড়িত। তদন্তে নেমে এই তথ্য হাতে আসতেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন পুলিশ অফিসার আবদুল হাইকে। পুলিশ দফতর থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। একবছর আগে কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে তিনি তলে তলে জালিয়াতি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। পুলিশ দফতরে কাজ করার সুবাদে নানা খারাপ পথ সম্পর্কে জানা ছিল। সেই পথে হেঁটেই এসব করেছেন তিনি বলে পুলিশের মত।
আজ, শনিবার হাবড়া থেকে প্রাক্তন পুলিশ অফিসার আবদুল হাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, অভিযোগ উঠেছিল ১৫০টি পাসপোর্টের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ৫২টি পাসপোর্টের ইনকয়ারিং অফিসার ছিলেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সাব ইনস্পেক্টর আবদুল হাই। তিনি পাসপোর্ট পিছু ২৫ হাজার করে ঘুষ নিতেন বলে অভিযোগ। ধৃত প্রাক্তন পুলিশ অফিসার অবসরের আগে পুলিশের পাসপোর্ট সেকশনে কাজ করতেন। তাই এই জালিয়াতি বা প্রতারণা কেমন করে করতে হয় সেটা জানতেন আবদুল হাই। এই গ্রেফতার নিয়ে পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে একাধিকবার বেআইনি কাজ করেন আবদুল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘শুধু মুখে উপদেশ দিলে হবে না, কাজেও করে দেখান’, ফিরহাদকে নিশানা হুমায়ুনের
পুলিশ সূত্রে খবর, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে নথি যাচাই করতে হয়। সেই নথি যাচাই করার সময়ই বেআইনিভাবে অনেকের নানা কারণে আটকে যেত। তখন তাঁদেরকেই পাসপোর্ট পাইয়ে দিতেন তিনি জালিয়াতির পথ ধরে। পাসপোর্ট পিছু ২৫ হাজার টাকা করে নিতেন এই জালিয়াতি করার জন্য বলেও অভিযোগ। পাসপোর্ট কাণ্ডের চাঁই বলে উঠে আসা সমরেশের সঙ্গে আবদুলের যোগ ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোলের অফিসেও কাজ করেছেন আবদুল হাই। তাই কোন সমস্যায় কোন পথে কাজ হাসিল করতে হয় তা তাঁর জানাই ছিল।
এছাড়া কদিন আগে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এই চক্রের কিংপিন মনোজ গুপ্ত। লক্ষ লক্ষ টাকার ভুয়ো নথি দিয়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি করে দিত যে চক্র তার সঙ্গে জড়িত ছিল সে। এই সন্দেহ থেকেই তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। প্রাক্তন পুলিশের এসআই এই পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের সঙ্গেই কাজ করতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। অবৈধভাবে যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বা অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে আসত এবং পাসপোর্টের জন্য আবেদন করত তারা সহজেই এই চক্রকে টাকা দিয়ে পাসপোর্ট পেয়ে যেত। অর্থের প্রলোভনে পা দিয়ে এই জালিয়াতি করে চলেছিলেন আবদুল হাই। অবসরের পরও করছিলেন বলে অভিযোগ।