স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নাকচ করায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল হাসপাতাল চত্বর। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির সত্যসাঁই সেবা সদনে। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অনুমোদিত নার্সিংহোম হওয়া সত্বেও রোগীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
রোগীদের পরিবারের অভিযোগ, এই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না-থাকার সত্বেও রোগীদের মোটা অঙ্কের টাকা বিল ধরানো হচ্ছে। দিনে ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিল আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত ২৪ জুলাই ওই হাসপাতালে ভরতি হন এগরা ১ ব্লকের সাহাড়া অঞ্চলের দক্ষিণ শীপুর গ্রামের বাসিন্দা মহামায়া পাহাড়ি (৪৬)। হাসপাতালে তরফ থেকে রোগীর স্বামী অনন্ত পাহাড়িকে জানানো হয়, হাসপাতালে পরিষেবা বাবদ প্রত্যেকদিনের খরচ ২৫ হাজার টাকা করে পড়বে। রোগীর আত্মীয়রা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করার আবেদন জানান। এদিকে রোগীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে শুরু করে। ওইদিনই চিকিৎসা শুরু করার জন্য রোগীর পরিবার ২০ হাজার টাকা ওই হাসপাতালে জমা করেন। হাসপাতালে চাপে ২৫ তারিখ পুনরায় আরও ২০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু ওই দিনই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় মহামায়া দেবীর।
এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় টাকা ফেরতের দাবি করেন পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, ২৪ ঘণ্টার জন্য হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তাঁদের রোগী। সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের প্রদেয় ৪০ হাজার টাকার মধ্যে হাসপাতালের খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা কেটে, বাকি ১৫ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান মৃতার স্বামী। অভিযোগ, সেই আবেদনে কোনও কর্ণপাত করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্টে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করে তারা। ২৯ তারিখ কাঁথি পুরসভায় গিয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী। পুরসভায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝির বক্তব্য, ‘যদি ওই পরিবার তাঁদের কাছে অভিযোগ জানায়, তা হলে হাসপাতালে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’