আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করেছেন চিকিৎসকরা। অভয়াকে ধর্ষণ ও খুনের বিচারের দাবির পাশাপাশি হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন তারা। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধ এবং নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকারের একাধিক পদক্ষেপের পর পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়াররা। ৪৩ দিন ধরে কর্মবিরতির পর তারা শনিবার থেকেই কাজে ফিরেছেন। আর কাজে পুনরায় যোগ দিতেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটল রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালে। এক কর্তব্যরত হেনস্থার অভিযোগ উঠল। শুধু তাই নয়, আরজি কর করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয় ওই নার্সকে। পাশাপাশি প্রভাব খাটিয়ে তাঁর চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দেয় রোগী পরিবারের সদস্যরা। এমনই ঘটনা ঘটেছে মালদার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চিকিৎসককে রাস্তায় ফেলে পেটাল পুলিশ, ভিডিয়ো দেখে স্তম্ভিত সোশ্যাল মিডিয়া
কী ঘটেছিল?
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে হতে এসেছিলেন এক রোগী। তার নাম আজগর আলি। তিনি হরিশচন্দ্র পুরের বাসিন্দা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর আত্মীয়রা। সেই মতোই রোগীর অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কিন্তু, তারপরেই ঘটে বিপত্তি।
অভিযোগ, রোগী পরিবারের লোকজন নার্সের চেয়ার টেনে বসেন। তা দেখে আপত্তি জানান কর্তব্যরত নার্স। তিনি রোগী পরিবারের সদস্যদের নার্সের চেয়ার ব্যবহার করতে নিষেধ করেন। এই নিয়ে নার্সের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রোগী পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, এর পরে নার্সকে কটু কথা বলার পাশাপাশি অশালীন মন্তব্য করা হয়। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। নার্সের অভিযোগ, রোগী পরিবারের একজন তাঁকে বলেন, ‘আরজি কর করে দেব।’ এমনকী প্রভাব খাটিয়ে তাঁর চাকরি খেয়ে নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে নার্সদের সঙ্গে রোগী পরিবারের সদস্যদের তুমুল বচসা বাঁধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।এই অভিযোগ পেয়েই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। ঘটনায় রোগী পরিবারের একজনকে আটক করা হয়। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন নার্সরা।
প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার পরে নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে জোরদার আন্দোলন করেন চিকিৎসকরা। তারপরে শেষ পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর আশ্বাস দেয় রাজ্য সরকার। এরজন্য কয়েকশো কোটি বরাদ্দ করা হয়। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সিসিটিভি বসানো থেকে শুরু করে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের কথা জানায় রাজ্য সরকার। সেই প্রতিশ্রুতি পেয়ে পুনরায় কাজে যোগ দেন জুনিয়ররা। কিন্তু, তারপরেও যে নিরাপত্তায় যে খামতি রয়েছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল এই ঘটনা।