ডুয়ার্সের ডায়নার টুকরো ফরেস্ট। ডায়না রেঞ্জের ওই জঙ্গল থেকে গত দুদিন ধরেই অদ্ভূত শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এনিয়ে নানা রটনা শুরু হয়ে যায়। তবে বর্তমানে জঙ্গলে ঢোকার নানা বিধিনিষেধ জারি করা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কীসের শব্দ এটি? জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্য়ে এনিয়ে আতঙ্কও ছড়ায়।
ক্যারন চা বাগানের দিকে যে রাস্তাটি চলে গিয়েছে তার পাশের জঙ্গলে বনকর্মীরা দিন দুয়েক ধরে খোঁজাখুঁজিও করেন। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। কিন্তু চারপাশটা একটু নির্জন হলেই ফের সেই একই শব্দ। বনকর্মীরাও এনিয়ে কিছুটা ধন্দের মধ্য়ে পড়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারাও চারপাশটা খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু শব্দের উৎস কিছুতেই ভেদ করা যাচ্ছিল না। বনদফতরের অনারারি ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী জানিয়েছেন, এই আওয়াজকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। তবে সেই রহস্যভেদ হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত বনদফতরই সেই শব্দের রহস্যভেদ করে ফেলল। বৃহস্পতিবার বিকালে ওই জঙ্গলের মধ্যে হরিণের পায়ের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বনদফতরের কর্মীরা সেই দাগ পরীক্ষা করে দেখেছেন সদ্যই সেখানে হরিণ ছিল। সেটি সম্ভবত বার্কিং ডিয়ার। সেটাই অনবরত গত দুদিন ধরে ডাকছিল। সঙ্গীহারা হওয়ার কারনেই সম্ভবত সেটি ডাকাডাকি করছিল। তবে আর সেই ডাক পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ জঙ্গলের ওই জায়গাটি ছেড়ে এটি সম্ভবত অন্যত্র পালিয়ে গিয়েছে। সেকারনেই আর ডাক শোনা যাচ্ছে না।
বনদফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ, দক্ষিণ চিন, তাইওয়ানে এই ধরনের বার্কিং ডিয়ার পাওয়া যায়। রাতদিন জঙ্গলে এদের ডাক শোনা যায়। সাধারণত প্রজনন ঋতূতে মহিলা বার্কিং ডিয়ার পুরুষ সঙ্গীকে আকর্ষণ করার জন্যও একনাগাড়ে ডেকে চলে। আবার কোনও বিপদের সম্ভাবনা থাকলেও সেটি অনবরত একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ডাকতে থাকে।