১৫ই অগস্ট আসতে এখনও কয়েকদিন বাকি। তবে নিয়ম মেনে ১লা অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালিত হল কোচবিহারের সাবেক ছিটমহলে। একটু পেছন ফিরে তাকানো যাক।২০১৫ সালের ৩১শে জুলাই। মাঝরাতে ছিটমহলে উঠেছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। ছিটমহল বিনিময় চুক্তির জেরে ভারতে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিট চলে আসে ভারতের দিকে, অন্যদিকে বাংলাদেশে থাকা ভারতের ১১১টি ছিট বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। দীর্ঘ ৬৮ বছরের বঞ্চনার অবসান। সে বছর সারা রাত জেগেছিল সাবেক ছিটমহল। পরস্পরকে আলিঙ্গন, মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ উচ্ছাসে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলেন সাবেক ছিটবাসী।
এরপর ধাপে ধাপে ভোটাধিকার পেয়েছেন তাঁরা। এলাকায় উন্নয়নও হয়েছে অনেকটাই। তবুও নানা বঞ্চনা নিয়ে এখনও সরব সাবেক ছিটবাসীদের অনেকেই। তবুও ১লা অগস্ট এলেই যেন কোথাও বুকের ভেতর চেপে রাখা আবেগটা বাঁধ ভাঙা আনন্দের মতো ছড়িয়ে পড়ে মধ্য মশালডাঙা থেকে পোয়াতুরকুঠির আনাচে কানাচে। স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ। স্বাধীনতার পাওয়ার আনন্দ। বঞ্চনা থেকে মুক্তির আনন্দ। এই যেমন জয়নাল আবেদিন। ছিটমহল আন্দোলনের নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্তের নেতৃত্বে তিনিও শামিল হয়েছিলেন এই আন্দোলনে। তিনি বলেন, বঞ্চনা কিছু ক্ষেত্রে রয়েছে। এটা অস্বীকার করতে পারি না। তবে এই দিনটা এলেই নতুন করে আনন্দে ভেসে যাই আমরা।
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, এবার করোনা অতিমারির জন্য বড় করে কোনও অনুষ্ঠান বা জমায়েত করা হচ্ছে না। ৩১শে জুলাই রাতে মোমবাতি জ্বালিয়েছিলেন বাসিন্দারা। স্বাধীনতা প্রাপ্তির স্মারক হিসাবে। ১লা অগস্ট সকালে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এলাকায়। বাসিন্দাদের দাবি, ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদনের আগে পর্যন্ত কার্যত নেই রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন তাঁরা। ভোটাধিকার তো অনেক দূরের কথা, ছিটমহলবাসী পরিচয় দিয়ে মূল ভূখণ্ডের কোনও স্কুল কলেজে কিংবা হাসপাতালে ভর্তির অধিকারও তাঁদের ছিল না। ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি সম্পাদনের কৃতিত্ব কার এনিয়ে দড়ি টানাটানি কিছু কম হয়নি। তবুও ১লা অগস্ট মানেই নতুন করে বাঁচার দিন সাবেক ছিটবাসীর কাছে।