রক্ষকই যখন ভক্ষক! পুলিশের কাজই হল মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ করা। কিন্তু, সেই পুলিশের বিরুদ্ধে লুঠের অভিযোগ উঠল। এমন অভিযোগ উঠেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারের এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে তাকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এছাড়াও আরও দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর, ওই পুলিশ অফিসারের নাম নির্ভয় পাণ্ডে। তিনি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এস আই। অভিযোগ, কয়েকজন দুষ্কৃতীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাগুইআটির এক ব্যবসায়ীকে গম কেনার প্রলোভন দেখিয়েছিলেন ওই এস আই। অল্প দামে গম দেওয়া হবে বলে বাগুইআটির ওই ব্যবসায়ীকে জানানো হয়েছিল। এর জন্য নদিয়ার কল্যাণীতে আসতে বলা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। সেইমতোই গত বুধবার তন্ময় মন্ডল নামে ওই ব্যবসায়ী কল্যাণীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এরপর বেলঘড়িয়া কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে কিছু খাবারের জন্য একটি রেস্টুরেন্টে ঢোকেন। রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই ঘটে বিপত্তি। অভিযোগ, তার সামনে চলে আসে ৬-৭ জন লোক। কালো টাকা রয়েছে এই অভিযোগ তুলে তারা একপ্রকার জোর করে ওই ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। বিপদ বুঝে কোনওভাবে তাদের খপ্পর থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তন্ময় বাবু। সেই সময় গাড়িটি নৈহাটি থানা এলাকার রাজেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড স্কুলের সামনে ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে যায়। তখন চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন ওই ব্যবসায়ী। তার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা গাড়ি আটকে ফেলেন।
ঘটনায় গাড়ি থেকে কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও দুজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়রা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছিল বাকিরা। পরে ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসআই নির্ভয় পাণ্ডের নাম জানতে পারে নৈহাটি থানার পুলিশ। তাদের জেরা করে ওই পুলিশ জানতে পারে ঘটনার সঙ্গে ওই এসআই জড়িত রয়েছেন। এরপরে ব্যারাকপুরের লাটাবাগান পুলিশ লাইন থেকে এসআই নির্ভয় পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।