ডানকুনিতে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) ভরসন্ধ্য়ায় শুটআউট এবং তাতে জেসিবি চালকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু হতেই সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
কিন্তু সূত্রের খবর, ৩৫ বছরের বান্টি সাউয়ের খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম বিকাশ ওরফে পিন্টু সাউ। এই পিন্টু আবার নিহত বান্টির দূর সম্পর্কের ভাইরাভাই। আসলে পিন্টুর স্ত্রী সঙ্গীতা নিহত বান্টির স্ত্রীর মাসতুতো বোন।
প্রশ্ন হল - কী কারণে খুন হতে হল বান্টিকে? সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ। কিন্তু, নিহত যুবকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে সংবাদমাধ্যমের হাতে বেশ কিছু তথ্য এসেছে। সেই অনুসারে, দু'টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল - প্রথমত, বান্টির সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিবাদ এবং দ্বিতীয়ত, বান্টিকে দেওয়া খুনের হুমকি!
বান্টির বাবা রাজকুমার সাউ আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে একজন জেসিবি (আর্থ মুভার) চালক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এমন কারও কোনও শত্রুতা ছিল না যে এভাবে তাঁকে খুন করা হবে। অন্তত রাজকুমারের এমন কিছু জানা নেই বলেই দাবি করেন তিনি।
কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, বান্টির সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক একেবারেই ভালো ছিল না। রাজকুমার জানান, বছর চারেক আগে বান্টি বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরেই স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন না তিনি। বান্টি থাকতেন তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে। রাজকুমারের অভিযোগ, তাঁর পুত্রবধূর সঙ্গে অন্য পুরুষের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। একথা জানার পরই স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে চেয়েছিলেন বান্টি। কিন্তু, বান্টির স্ত্রী তাতে রাজি ছিলেন না।
রাজকুমারের দাবি, এরপর উলটে বান্টির বিরুদ্ধেই বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী। এ নিয়ে অশান্তির জেরে বান্টির ভাইরাভাই পিন্টু সম্প্রতি তাঁকে খুনের হুমকি দেন। সেই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার কাজ থেকে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে অন্য একটি বাইকে আসা দুই (সম্ভবত) দুষ্কৃতির মধ্য়ে একজন বান্টিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর বান্টির মৃত্যু হয়।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে হইচইয়ের মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ার তেঁতুলতলা এলাকার বাসিন্দা বিকাশ ওরফে পিন্টু সাউকে আটক করা হয়। তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতার দাবি, শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে পিন্টুকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
সঙ্গীতা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধেয় যখন বান্টির উপর হামলা চালানো হয়, সেই সময় পিন্টু বাড়িতেই ছিলেন। কারণ, ওই সময় বাড়িতে তাঁদের মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল।
সূত্রের আরও দাবি, প্রাথমিকভাবে ডানকুনির এই শুটআউট এবং খুনের ঘটনার নেপথ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন বা পারিবারিক বিবাদ রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে, আপাতত এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।