মালদার মানিকচকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। মানিকচকের আইসি সহ তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। মানিকচকের আইসিকে আটকে রাখা হয়েছিল বলে খবর। এসবের মধ্য়ে আত্মরক্ষায় গুলি চালায় পুলিশ। স্বীকার করে নিলেন জেলা পুলিশ সুপার।
প্রদীপ যাদব, পুলিশ সুপার মালদা জানিয়েছেন, পুলিশের আশ্রয় নেওয়া বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। এক রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। একটা কনফার্ম করা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সেটাই জানা গিয়েছে। এছাড়া রবার বুলেট চালিয়েছিল। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়েছিল।
কিন্তু এবার প্রশ্ন, বিদ্যুৎ চেয়েছিলেন মালদার সাধারণ মানুষ। প্রচন্ড গরমে দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। তার জেরে এলাকার মানুষ সেই সমস্যা মেটানোর দাবি তুলেছিলেন। সেটা নিয়েই আন্দোলন। আর সেই বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশকে আটকে রাখে উত্তেজিত জনতা। আইসির মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। পেট্রল বোমা, লাঠি, ইঁট নিয়ে তাড়া করে বাসিন্দারা। পুলিশ একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেটাও জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল বলে খবর। এরপর পুলিশ আত্মরক্ষায় গুলি চালায় বলে দাবি পুলিশের।
মালদার মানিকচকে গণ্ডগোলের ঘটনায় মানিকচক থানার আইসি সহ তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। আইসির মাথা ফেটে গিয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট ছোঁড়া হয়। আহত পুলিশকর্মী আধিকারিকদের ভর্তি করা হয়েছে স্থানীয় নার্সিংহোমে ও হাসপাতালে। স্থানীয় দুই বাসিন্দাও জখম হয়েছেন। তাদেরকেও মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার প্রথমে জানিয়েছিলেন, তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন । তখনও গুলি চালানোর কথা জানাতে চাননি তিনি। তবে পরবর্তী সময় সাংবাদিক বৈঠকে তিনি গুলি চালানোর কথা স্বীকার করে নেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য় হয়েছে। কিন্তু গুলি চালানোকে আমরা সমর্থন করি না। আর রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, ওখানে সাধারণ মানুষের আপত্তিতেই টাওয়ার বসানো যাচ্ছে না।
এদিকে কেন গুলি চালানো হল তা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন।
জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অশান্তির অভিযোগে ২৬জনকে আটক করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপারের দাবি, পুলিশের উপর হামলা হয়েছিল।আইসি মানিকচক আহত হয়েছেন। এএসআই আহত হয়েছেন। একটা বাড়িতে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে কয়েকজন সাধারণ মানুষও ছিলেন। একজন বাচ্চা, মহিলাও ছিলেন।
পুলিশের দাবি, সেই সিভিলিয়ানদের উপর যাতে হামলা না হয় সেটাও দেখা হয়েছিল।
কিন্তু তারপরেও একটা প্রশ্ন বার বার উঠছে,মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জমানায় গুলি চালানোর বিষয়টি কি এড়িয়ে যেতে পারত না পুলিশ?
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ চেয়েছিলেন। সেই বিদ্যুৎ চাওয়ার দাবিতে আন্দোলন হচ্ছিল। আর তার বদলে বুলেট মিলল এবার। শীতলকুচিতে যখন আত্মরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছিল তখন তার বিরোধিতা করা হল। আর এখানে কেন পুলিশ গুলি চালাল? এর বেলায় কেন পুলিশকে দায়ী করা হবে না?