রামপুরহাটে সপ্তম শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রী খুনের ঘটনায় প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তদন্তে সামনে এসেছে, ধৃত শিক্ষক মনোজ পাল শুধু খুনই করেনি, ছাত্রীর দেহ লোপাটের জন্যও ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশের জেরায় সে স্বীকার করেছে, প্রথমে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে গলা টিপে খুন করে ওই ছাত্রীকে। এরপর গলার শিরা কেটে রক্ত বার করে দেয়। শুধু তাই নয়, হাঁসুয়া দিয়ে দেহ তিন টুকরো করে ফেলে সে। সূত্রের দাবি, থ্রিলার সিনেমা দেখে দেহ গোপন করার কৌশল রপ্ত করেছিল ওই শিক্ষক।
আরও পড়ুন: রামপুরহাটে নাবালিকার দেহ দ্রুত পচানোর জন্য রাসায়নিক মিশিয়েছিলেন শিক্ষক'
পুলিশ জানিয়েছে, ২৮ অগস্ট রাতে ছাত্রীটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে মনোজ পাল। অভিযোগ, ছাত্রীকে ঘরে রেখেই প্রচুর মদ্যপান করে সে। রাতে যখন শিক্ষক ঘুমিয়ে পড়ে, তখন ছাত্রী পালানোর চেষ্টা করলে জেগে ওঠে মনোজ। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে জোর করে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ফেলে। এরপর দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, পরদিন অর্থাৎ ২৯ অগস্ট বাথরুমে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় ছাত্রীকে। পরে দেহ বিকৃত করার ভয়ঙ্কর কাজ করে অভিযুক্ত।
শুধু তাই নয়, পুলিশের দাবি, মনোজ পাল পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হলেও রসায়ন ও চিকিৎসাবিদ্যার নানা বিষয়ে তার বিশেষ জ্ঞান ছিল। খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে কোন রাসায়নিক ব্যবহার করলে তা পরীক্ষাগারে ধরা পড়বে না, সে বিষয়েও তার ধারণা ছিল। সেই রাসায়নিক ব্যবহার করেই বাথরুম পরিষ্কার করার চেষ্টা করে সে।এদিকে পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি করলেও ধৃত শিক্ষক অত্যন্ত নির্লিপ্ত। দিনের পর দিন থানায় বসে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় থাকে সে। এই অদ্ভুত আচরণে হতবাক তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে রামপুরহাটের একটি জায়গা থেকে ওই ছাত্রীর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছিল। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও মনোজ পাল দাবি করেছে, ছাত্রীকে সে ধর্ষণ করেনি। তবুও পুলিশ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করেছে।