পূর্ব বর্ধমানের কালনার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। টিউশন পড়তে গিয়ে মাকে ফোন করে ছাত্রীটি। ফোনেই সে মাকে জানিয়েছিল তাকে বাঁচতে দেবে না। তার পরেই রেললাইনে তার ট্রেনে কাটা মৃতদেহ উদ্ধার। বর্ধমানের কালনা জিউধারা রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দ্বাদশের ছাত্রী অঙ্গনা হালদারের মৃত্যু কীভাবে হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। ওই ছাত্রী স্টেশনের দিকে কেন গিয়েছিল? কাকেই বা ছাত্রী ভয় পাচ্ছিল? এইসব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ‘ওরা আমায় বাঁচতে দেবে না’, মাকে ফোনের পরই রেল লাইনের ধারে উদ্ধার ছাত্রীর দেহ
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ কালনা স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে। তাতে দেখা যায়, শুক্রবার সন্ধে ৬.৩৮ মিনিটে স্টেশনের ওভার ব্রিজের কাছে ছাত্রীটি ইতস্ততভাব ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার কিছুক্ষণ পরেই সিড়ি বেয়ে ওভারব্রিজে উঠে যায়। যদিও সিসিটিভি ফুটেজে ছাত্রীর সঙ্গে কাউকে দেখা যায়নি। এই অবস্থায় ছাত্রীর সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এখন প্রশ্ন উঠছে, ছাত্রী স্টেশনে কেন গিয়েছিল? কারও সঙ্গে সেখানে দেখা করেছিল নাকি কারও জন্য অপেক্ষা করছিল? তাছাড়া কেউ তার ওপর কোনও কিছু নিয়ে চাপ সৃষ্টি করছিল কি না সে।বিষয়েও উঠছে প্রশ্ন। এখন এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, সন্ধ্যা ৬.৩৮ টা থেকে ৭.১০ টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ এই ৩২ মিনিটে কী ঘটেছিল সেটা জানতে পারলেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, অঙ্গনা প্রাইভেট টিউশন পড়া শেষে রাস্তায় বেরিয়ে মাকে ফোন করে। ফোনে ছাত্রীর শেষ কথা ছিল, ‘ওরা আমায় বাঁচতে দেবে না।’ তার কিছুক্ষণের মধ্যেই জিউধারা রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রীর ট্রেনে কাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। প্রতিদিনই মায়ের সঙ্গে কালনা শহরের একটি ইংরেজির গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়তে যেত ছাত্রীটি। শুক্রবারও ওই ছাত্রী পড়তে গিয়েছিল। অন্যদিনের তুলনায় এদিন কিছুটা আগেই ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। তাই কিছুটা সময় আগেই বেরিয়েছিল অঙ্গনা ।এরপরই তার মাকে ফোন করে সে বলে ‘ওরা আমায় বাঁচতে দেবে না।’ এই কথা বলার পরেই ফোনের লাইন কেটে যায়। এরপর রাতেই কালনা জিআরপি অফিসের সামনে হাজির হয় মৃতের পরিজনেরা। কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগও ঘটনাস্থলে যান। তবে এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয় বলেই দাবি করেছেন পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে এলাকাবাসী এবং তার শিক্ষক। তারা দাবি করছেন, অঙ্গনা আত্মঘাতী হওয়ার মতো মেয়ে নয়। শিক্ষক জানান, টিউশন পড়ার সময় তিনি অঙ্গনার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পাননি ।