থানা চত্বরে বসেছিল সালিশি সভা। সেই সভায় অপমানিত হওয়ার পরই থানা চত্বরেই উদ্ধার হল যুবকের ঝুলন্ত দেহ। সোমবার দুপুরে বীরভূমের সাঁইথিয়া থানায়। অভিযোগ, দেহ যে থানা চত্বর থেকেই উদ্ধার হয়েছে তা প্রথমে গোপন করার চেষ্টা করে পুলিশ। তার পর প্রায় ঘণ্টাখানেক সিউড়ি সদর হাসপাতালে বেওয়ারিশ পড়ে থাকে দেহটি। পুলিশের দাবি, সমীর লেট নামে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারের প্রশ্ন, সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া থানা চত্বরে কেউ আত্মঘাতী হল কী করে?
আরও পড়ুন - মাটির সহনক্ষমতার বাইরে বর্জ্য, বেলগাছিয়া ভাগাড় নিয়ে বিপদের আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের
আরও পড়ুন - তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত ইফতারে নেতা–কর্মীদের মেনুতে বৈষম্য, অভিযোগ অন্দরে
আরও পড়ুন - যুবককে উত্তর কলকাতার যৌনপল্লিতে আটকে চলল ব্ল্যাকমেল, মোটা টাকা নিতেই গ্রেফতার
জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের বাড়ি রামপুরহাট থানা এলাকার বামনি গ্রামে। ৯ বছর আগে সীমা মণ্ডল নামে স্থানীয় এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির ২ মেয়ে রয়েছে। পরিবারের লোকেদের দাবি, স্থানীয় অন্য এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ৩ বছর আগে ঘর ছাড়েন সীমা। এর পর সমীরের সঙ্গে তাঁর ২ মেয়ের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
মেয়েদের সঙ্গে দেখা করার অধিকার চেয়ে সোমবার সাঁইথিয়া থানায় গিয়েছিলেন যুবক। অভিযোগ, আইন কানুনের পরোয়া না করে থানা চত্বরেই আজমল শেখ নামে এক ব্যক্তি থানা চত্বরেই দীর্ঘদিন ধরে সালিশি সভা চালান। সেখানে যেতে বলা হয় সমীরবাবুকে। সমীর সেখানে গেলে সালিশির নামে যুবককে না না অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর থানা চত্বরে একটি টিনের শেড থেকে উদ্ধার হয় যুবকের ঝুলন্ত দেহ।
অভিযোগ, এখানেই শেষ নয়, সমীরবাবুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে দেহ উদ্ধার করানো হয়। এর পর সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়েই দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিউড়ি সদর হাসপাতালে। কিন্তু দেহ নিয়ে কোনও পুলিশ আধিকারিক না আসায় দেহ মর্গে রাখার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। ফলে মর্গের বাইরে প্রায় ১ ঘণ্টা বেওয়ারিশ অবস্থায় পড়ে ছিল দেহটি।
নিহত যুবকের দিদি সুমতি লেট বলেন, ‘সকালে ভাই কাউকে কিছু না বলে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তার পর রামপুরহাট থানা থেকে পুলিশ এসে খবর দেয় যে সাঁইথিয়া থানায় ভাইয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। থানা চত্বর তো সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া থাকে। তার মধ্যে কেউ কী করে আত্মঘাতী হতে পারে?’ এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। যদিও পুলিশের তরফে এই ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও বক্তব্য প্রকাশ্যে আসেনি।