ভালোই হয়েছে মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা। বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের এ কথাই জানিয়েছিল ছাত্রী। কিন্তু, তার কিছুক্ষণ পরে ঘরের মধ্যে থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের গুমা এলাকার। ওই ছাত্রীর নাম সোনালী খাতুন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রেম ঘটিত কারণে আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্রী। তবে এর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: এরকম হয় না! মাধ্যমিকের বাংলা প্রশ্ন নিয়ে বললেন শিক্ষক, জানালেন ‘ব্যাকরণটা কঠিন’
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরের সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের সম্পর্ক রয়েছে। এদিন পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর কিশোরীর কাছে একটি ফোন আসে। তখন কিশোরী অন্য ঘরে গিয়ে কথা বলছিল। তার কিছুক্ষণ পরেই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবক নানাভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করত। শুধু তাই নয়, তাকে হুমকিও দিত। সোমবার পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর ছাত্রী বেশ আনন্দেই ছিল। তবে ওই যুবকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় সে অন্য ঘরে চলে যায়। আর তারপরেই ছাত্রী আত্মঘাতী হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।
জানা গিয়েছে, কিশোরীর আসল বাড়ি দত্তপুকুরে। মা আজমিরা বিবির মৃত্যুর পর সে দিদার বাড়িতে থাকছিল। সেখান থেকেই পড়াশোনা করত। কিশোরীর দিদা জানান, তিনি বাইরে ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছিলেন। শুনতে পেয়েছিলেন, সোনালি ফোনে কাউকে বলছে, এই পরীক্ষার কয়েকদিন যেন তাকে বিরক্ত না করা হয়। এরপর সাড়া না পেয়ে ডাকতে গিয়ে দরজা খুলেই দেখেন সোনালি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
এই ঘটনায় যুবকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। তাদের অভিযোগ, সোনালীকে জোর করেও বিয়ের চাপ দিচ্ছিল ওই যুবক। অভিযুক্ত যুবকও গুমা দু'নম্বর পঞ্চায়েতের ছোট বামুনিয়া এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। সোনালী গুমা রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠ স্কুলে পড়াশোনা করতো। তার পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছিল রাজিবপুর গার্লস স্কুলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিশোরীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কী কারণে কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।