সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়। তা থেকে ভিন রাজ্যের যুবকের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল শিক্ষিকার। আর তারপরেই টাকা চেয়ে শিক্ষিকাকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেল যুবকের। শিক্ষিকার ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেয় যুবক। অবশেষে মানসিক চাপে আত্মঘাতী হলেন সেই শিক্ষিকা। ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুরের। ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিবারের দাবি, ব্ল্যাকমেল করার ফলে মানসিক চাপে এই পদক্ষেপ করেছেন মহিলা।
আরও পড়ুন: দম্পতির গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার আসানসোলে, ঋণের চাপেই কি আত্মহত্যা? তদন্তে পুলিশ
জানা গিয়েছে, শিক্ষিকা বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অশান্তির মধ্যে ছিলেন। বছর ৩২-এর ওই শিক্ষিকার সঙ্গে ভিন রাজ্যের ওই যুবকের পরিচয় হয়েছিল ফেসবুক মারফত। এরপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব করে ওঠে।অভিযোগ, বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পরেই ওই যুবক শিক্ষিকাকে ব্ল্যাকমেল করে টাকা দাবি করতে শুরু করে। পরিবারের দাবি, শিক্ষিকার ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিত যুবক। আর সেগুলি যাতে ফাঁস না হয় তার জন্য সে শিক্ষিকার কাছে টাকা দাবি করত। এনিয়ে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন।
আরও জানা গিয়েছে, শিক্ষিকা গত ১১ মার্চ থেকে স্থানীয় একটি ব্যাঙ্কের শাখা থেকে বেশ কয়েকবার টাকা ট্রান্সফার করেছেন। ব্যাঙ্কের এক কর্মী জানান, বারবার টাকা পাঠানো নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। এই নিয়ে তিনি শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তবে মহিলা জানিয়েছিলেন, একটি পার্সেল আসার কারণে টাকা পাঠাচ্ছেন। যদিও পরে জানা যায়, মহিলা অন্য শাখা থেকেও টাকা পাঠিয়েছিলেন। শেষে মানসিক চাপ সইতে না পেরে চরম পদক্ষেপ করেন শিক্ষিকা। ঘর থেকেই শিক্ষিকাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। তখন তাঁরা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, শিক্ষিকা বিবাহিতা। তাঁর ৯ বছরের সন্তান রয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। অভিযুক্তের খোঁজ করছে তারা। ঘটনার সঙ্গে কোনও প্রতারণা চক্র জড়িত কি না সেবিষয়টিও জানার চেষ্টা করছে।