ব্ল্যাকমেইল করা হত উত্তর বারাকপুরের ভাইস চেয়ারম্যানকে, মৃত্যুতে মহিলা সহ ৫ জনের নামে FIR

ইছাপুর আনন্দমঠ এলাকার ভাড়াবাড়ির তিনতলার ছাদ থেকে উদ্ধার হয় সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝুলন্ত দেহ। তাঁর মৃতদেহের পাশ থেকেই একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছিল। এই সুইসাইড নোটে তিনি এক মহিলার নাম জানিয়েছিলেন। তাতে উল্লেখ করা ছিল, ব্ল্যাকমেইল করে মহিলা প্রচুর পরিমাণে টাকা চেয়ে তার উপর চাপ দিতেন।

উত্তর বারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে ৫ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করল পরিবার। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন হলেন মহিলা। মূলত সুইসাইড নোটের উপর ভিত্তি করেই ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায় নোয়াপাড়া থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। অভিযোগ, ভাইস চেয়ারম্যানকে ব্ল্যাকমেইল করে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল তারা। এমনকী এই টাকা দেওয়ার জন্য ভাইস চেয়ারম্যানকে অনেক ধার দেনাও করতে হয়েছিল। ঘটনার পরে অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

শনিবার সকালে ইছাপুর আনন্দমঠ এলাকার ভাড়াবাড়ির তিনতলার ছাদ থেকে উদ্ধার হয় সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝুলন্ত দেহ। তাঁর মৃতদেহের পাশ থেকেই  একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছিল। এই সুইসাইড নোটে তিনি এক মহিলার নাম জানিয়েছিলেন। তাতে উল্লেখ করা ছিল, ব্ল্যাকমেইল করে মহিলা প্রচুর পরিমাণে টাকা চেয়ে তার উপর চাপ দিতেন। মূলত একটি ভিডিয়ো ফাঁস করিয়ে দেওয়ার নাম করেই এই ব্ল্যাকমেইল।

  পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, এই ঘটনার সঙ্গে আরও চারজন জড়িত রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেন- মোহনপুরের বাবনপুর লম্ফ বাজারের বাসিন্দা জয়শ্রী দাস, তাঁর স্বামী সঞ্জয় দাস সহ একটি ক্লাবের কয়েকজন এবং একজন আইনজীবী। শনিবার উত্তর বারাকপুরের আটবারের কাউন্সিলার তথা ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। 

সুইসাইড নোট ছাড়াও ছেলে এবং স্ত্রীকে পৃথকভাবে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছে পুলিশ। তার সত্যতা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা । প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ওই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করেই লাগাতার ব্ল্যাকমেইল করেছিল অভিযুক্তরা। সেই চাপে নিজের জমানো টাকা তো বটেই এমনকী ধার দেনা করেও তাদের ধাপে ধাপে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু, তারপরেও অভিযুক্তরা ব্ল্যাকমেইল অব্যাহত রাখে। হুমকি দেওয়া হয় টাকা না দিলে ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়া হবে।  

ভিডিয়োর সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাছাড়া প্রশ্ন উঠেছে টাকা দেওয়ার পরেও কেন তিনি ভিডিয়ো ডিলিট করাননি। যদিও ভাইস চেয়ারম্যানকে ব্ল্যাকমেইল করার পিছনে দলের একাংশের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দল আলাদাভাবে তদন্ত করছে। উল্লেখ্য, দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরেছিলেন। আর তারপরে শনিবার সকালে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।