আইআইটি খড়গপুরের ছাত্র শাওন মালিকের মৃত্যুর তদন্তে একাধিক তত্ত্ব উঠে এসেছে। এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলেই নিশ্চিত করছে পুলিশ। একইসঙ্গে কী কারণে যুবক আত্মহত্যা করেছে? সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও উঠে এসেছে তদন্তে। সেক্ষেত্রে প্রেম, পরীক্ষায় ফল খারাপ এবং সাম্প্রতিক তাঁর আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার বিষয়টি সামনে এসেছে। সেই মতোই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খড়গপুর IIT ছাত্রের মৃত্যু, পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হল ভিসেরার নমুনা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কীভাবে শান্তিতে মৃত্যুবরণ করা যায় বা মৃত্যুর পর কীভাবে স্বর্গ প্রাপ্তি করা যায়? সেই সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়মিত গুগল সার্চ করতেন শাওন। তাঁর মোবাইল এবং ল্যাপটপ ঘেঁটে তদন্তকারীরা এইসব সংক্রান্ত সার্চ হিস্ট্রি খুঁজে পেয়েছেন। অনলাইনে সার্চ করে এইসব বিষয়ে তিনি বিভিন্ন প্রতিবেদন পড়তেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সমস্ত বিষয়ের বিভিন্ন লেখকের সঙ্গেও তর্ক বিতর্ক করতেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেই তাদের সঙ্গে চলত শাওনের তর্কাতর্কি। তদন্তকারীদের অনুমান, শাওনের ধারণা ছিল, আত্মহত্যার পথেই শান্তিতে মৃত্যুবরণ সম্ভব। সে থেকেও আত্মহত্যার বিষয়টি তাঁর মাথায় আসতে পারে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। ইতিমধ্যেই তাঁর মোবাইল এবং ল্যাপটপ থেকে ডিজিটাল নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন যে এটি হল আত্মহত্যার ঘটনা। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই আইআইটিতে ভালো ফল করে আসছিলেন শাওন। ফলে অধ্যাপকরাও তাঁকে বেশ স্নেহ করতেন। তবে কিউমিলেটিভ গ্রেডেশন পয়েন্ট তাঁর কমে হয়েছিল ৯.১। সহপাঠীদের দাবি, এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তাঁকে বেশ চিন্তাগ্রস্ত দেখাতো। এই থেকে মুক্তি পেতে তিনি আইআইটির ভিতরে অবস্থিত কাউন্সেলিং সেন্টারেও বেশ কয়েকবার গিয়েছিলেন।
এছাড়াও জানা যাচ্ছে, তাঁর বেশ কয়েকজন বন্ধু বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন গ্রীষ্মকালীন ইন্টার্নশিপে। কিন্তু, তাঁর ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। ভালো ছাত্র হওয়ার পরেও সুযোগ না পাওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তদন্তে আরও একটি বিষয় জানা গিয়েছে, ওই তরুণ স্কুল জীবনে একটি মেয়েকে একতরফাভাবে ভালোবাসতেন। তবে আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার পরেও মেয়েটির পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাননি তিনি। তা নিয়েও তাঁর মধ্যে অবসাদ ছিল বলে জানা যাচ্ছে।