কুকথায় পঞ্চমুখ অখিল গিরি। মন্ত্রী বলে কথা! তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে এমন কথা তিনি বলেছিলেন যে, তারপর খোদ বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী এনিয়ে ক্ষমা চান। তবে তারপরেও যে এতটুকু বদলাননি অখিল গিরি সেটা আরও একবার সামনে এল।
মুখ্য়মন্ত্রীই নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি জমি থেকে জবরদখলমুক্ত করতে। সেই নির্দেশই পালন করতে গিয়েছিলেন বনদফতরের কাঁথির রেঞ্জ অফিসার। আর সেই মহিলা রেঞ্জ অফিসারকে অভব্যভাবে হুঁশিয়ারি দিলেন মন্ত্রী। এমনকী ডিএফওর সঙ্গেও তিনি ফোনে তিনি রীতিমতো বচসা করেন বলেও খবর।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কোনও সাধারণ মানুষ যদি এই ভাষায় কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতেন তবে তো তাকে গ্রেফতার করত পুলিশ। তবে মন্ত্রীর বেলায় সেই কড়া পদক্ষেপ নয় কেন?
বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কি এই মন্ত্রীকে জেলে পাঠানোর সাহস দেখাতে পারবেন? নারীদের মর্যাদা হানি করা ও সরকারি কর্মচারীদের বাধা দেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ দায়ের করা হবে? দেখা যাক তাকে জেলে পোরা হয় কি না পরোক্ষভাবে খুনের হুমকি দেওয়ার জন্য।
এদিকে এভাবে একজন মহিলা সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলেছেন মন্ত্রী তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারী সংগঠন।
একাধিক সরকারি কর্মচারী সংগঠন এনিয়ে সরব হয়েছে। তাদের দাবি এই ঘটনায় অবিলম্বে অভিযোগ দায়ের করা হোক।
কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, মহিলা আধিকারিকের সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন মন্ত্রী। জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা উচিত পুলিশের। অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত। আমরা সরকারি কর্মচারী হিসাবে এটাই মনে করছি।
এদিকে গোটা ঘটনায় দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে তৃণমূল। কিন্তু শুধু ভর্ৎসনা আর নিন্দা করলেই কি সব দোষ মাফ হয়ে যায়? এই প্রশ্নটাও তো উঠছে।
এদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ও বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ওই রেঞ্জ অফিসার মনীষা সাউকে ফোন করে জানান, আপনি সসম্মানে কাজ করুন।
কী বলেছেন অখিল গিরি?
মন্ত্রী অখিল গিরি কাঁথির রেঞ্জ অফিসারকে বলেন, আপনার আয়ু বেশিদিন নেই। সবাইকে নিয়ে চলুন। বেশিদিন থাকতে পারবেন না আর সাত-আটদিন দশদিন। বিট অফিসার, টফিসার সব জানি। কত বড় দুর্নীতি হয় সব জানি। ভেতরে কী আছে সব জানি। সব ফাঁস করে দেব বিধানসভায়।
এরপর ওই অফিসার বলেন, আপনার সঙ্গেও পার্সোনালি কোনও ব্যাপার নয়। ওদের সঙ্গেও নয়।
মন্ত্রী হকারদের দিকে দেখিয়ে বলেন, ওরা সারা রাত এখানে থাকে। আপনি থাকেন না। ঝড় মাথায় নিয়ে ওরা থাকেন। কারোর কথা শুনতে চাইছেন না। এরপর আঙুল উঁচিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেশি কথা বলবেন না। আপনি ফিরে যেতে পারবেন না। সরকারি কর্মচারী, মাথা নীচু করে কথা বলবেন। কত বড় জানোয়ার, বেয়াদপ! কথা বললে হবে না। ডাং নিয়ে পেটাব তখন বুঝবেন! তোপ মন্ত্রীর।