বাংলায় পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে। তাই পাসপোর্ট জালিয়াতি রুখতে মোবাইল অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা আগেই করেছিল রাজ্য সরকার। সেইমতোই এই অ্যাপ চালু করা হয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট এবং হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে এই দুটি এলাকায় মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। সফল হলে তা গোটা রাজ্যেই চালু করা হবে।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নিয়ে বদলেছে কিছু নিয়ম! আবেদনের আগে নজর রাখুন এই তালিকায়
গত ডিসেম্বরে পাসপোর্ট জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, ভুয়ো আধার বানিয়ে একের পর এক জাল পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। সে বিষয়টি সামনে আসতেই আদালতের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। এমনকী এই চক্রে জড়িতদের মধ্যে একজন পুলিশকর্মী ও ডাকঘরের দুই কর্মীও ছিলেন। ফলে পাসপোর্ট জালিয়াতি ঠেকাতে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে অ্যাপ আনার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার।
জানা যাচ্ছে, পাসপোর্টের জন্য ভেরিফিকেশন যাতে সঠিকভাবে হয়, তার উপরে জোর দেওয়া হবে এই অ্যাপে। আপাতত দুটি পুলিশ এলাকায় পাসপোর্ট অ্যাপ কতটা ভালো কাজ করছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোথাও খামতি আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। কোনও ত্রুটি পাওয়া গেলে সেগুলি সংশোধন করে গোটা রাজ্যে এই অ্যাপ চালু করা হবে। এদিকে কলকাতায় সার্ভারের সমস্যা থাকায় এই মোবাইল অ্যাপ চালু করা যায়নি। সেই সমস্যা মিটে গেলেই চালু করা যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে এই অ্যাপ?
পুলিশ সূত্রের খবর, এই অ্যাপে আবেদনকারীদের জমা দেওয়া সমস্ত নথি পুলিশের সার্ভারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে। যার ফলে নির্দিষ্ট আবেদনকারী সম্পর্কে সহজে তথ্য পাওয়া যাবে। এই অ্যাপে কী কী নথি জমা দিতে হবে, তা দেখতে পারবেন আবেদনকারী। আবার পুলিশও এই তথ্য দেখতে পারবেন। এছাড়াও, আবেদন কোন পর্যায়ে আছে তা সহজেই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে।
পাসপোর্ট অফিসারের এই আবেদন সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপও জানা যাবে এই অ্যাপে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানা বা বিভাগের ওসি এবং এসিরাও পাসপোর্টের তথ্য জানতে পারবেন। আবেদনের যাচাই সম্পূর্ণ হলে মেসেজ চলে যাবে আবেদনকারীর কাছে। এছাড়াও এই অ্যাপে অভিযোগও জানানো যাবে। এই অ্যাপে তথ্য সংগ্রহ থাকায় খুব সহজেই অনিয়ম এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।