নাটকের পর নাটক। তাও আবার রাজনীতির আঙিনায়। সবটাই যেন ঘটল আলো–আঁধারির নাট্যমঞ্চে। আর এই নাটকের নাম—‘দলবদল ঘিরে নাটক’। কারণ দুপুরে বিজেপিতে যিনি গিয়েছিলেন। রাতেই তিনি তৃণমূলে ফিরলেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতি মহিলা সদস্য রফিকা বিবি ও তাঁর স্বামী ইসরাফিল খান। তাঁদের সঙ্গে যারা গিয়েছিলেন তাঁরাও ফিরেছেন বলে দাবি রফিকার। সুতরাং আলোয় বিজেপিতে গিয়ে আঁধারে তৃণমূলে ফেরা নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরের দুটি পঞ্চায়েত এলাকার তিনটি গ্রাম থেকে বেশ কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে ছিলেন রফিকা ও ইসরাফিল। বিজেপি তখন দাবি করেছিল, দু’দফায় দুবরাজপুরে বিজেপি’র কার্যালয়ে জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম রজক ও যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক অনুপ সাহার হাত ধরে যোগ দিয়েছেন কয়েকশো মানুষ। এটা তৃণমূলের শেষের শুরু বলে বিজেপি নেতারা দাবি করেন।
এমনকী রফিকা দুপুরে বলেছিলেন, ‘কোনও দিন দলে গুরুত্ব পাইনি। মানুষের জন্য কাজ করতে পারিনি। নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়েই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’ কিন্তু যেই রাত হল তখনই ছবিটা আবার বদলে গেল। রাত পৌনে ৯টা নাগাদ দুবরাজপুর ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে এসে ফের তৃণমূলে যোগ দিলেন রফিকারা। তখন তিনি বলেন, ‘বিজেপি প্রলোভন দেখিয়েছিল। আমরাও ভুল বুঝেছিলাম তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। ভুল বুঝতে পেরে ফেরত এলাম।’
এই ঘটনা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ নির্বাচন জিততে এখন দলবদল খুবই জরুরি। বিশেষ করে বিজেপি’র কাছে। কারণ তারা বাংলা দখল করতে চায়। আর তৃণমূলের কাছে প্রমাণ করার বিষয় হল, তাঁরা সংগঠন ধরে রেখেছেন। আর উভয়ের এই পারস্পরিক চ্যালেঞ্জে এখন আলো–আঁধারির দোলাচলে চলছে নাটক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই বিষয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘ওঁরা স্বেচ্ছায় বিজেপিতে এসেছিলেন। এই মত বদলের পেছনে তৃণমূলের পরিচিত খেলা রয়েছে। পুলিশ লেলিয়ে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওঁদের জোর করে দলে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’ তৃণমূলের দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র বলেন, ‘বিজেপি’র চাপেই ওঁরা সাময়িক বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। ভুল বুঝে ফিরে এসেছেন। আমরা পুলিশকে ব্যবহার করি না।’