বাংলার বাজারে আলুর দাম উর্দ্ধমুখী। তা কিছুতেই কমছে না। টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধিরা বাজারে হানা দিয়েও দাম কমাতে পারছেন না আলুর। শাক–সবজির দামও বেড়েছে। এবার ডিমের দামও বেড়ে গেল অস্বাভাবিক হারে। সেক্ষেত্রে আলুর দাম এখনও ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আলুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত মানুষের এখন নাভিশ্বাস উঠেছে। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার আলু ভিন রাজ্যে রফতানি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। আর তাতেই চাপে পড়ে পাল্টা রাজ্য সরকারকে আলু কিনে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভিন রাজ্যে পাঠাতে পারছেন না বলে এটা পাল্টা চাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলার আলু হিমঘরে রেখে কৃত্তিম অভাব তৈরি করা হচ্ছিল। তাই হিমঘরের আলু বের করে দেওয়া হয়েছে। তারপর আলু ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে মোটা টাকা মুনাফা করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এটা জানতে পেরেই লাগাম পরানো হয় রফতানিতে। তাই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশিকা না দিয়েই ভিন রাজ্য—বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং অসম সীমানায় আলুবোঝাই ট্রাক আটকে দেওয়া হয়েছে। তাতে বিপুল লোকসান হয়েছে। বাংলার হিমঘরগুলিতে এখনও সাত লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। ডিসেম্বর মাসে রাজ্যবাসীর জন্য সেটার অর্ধেক পরিমাণ আলুই যথেষ্ট। রাজ্যের হিমঘর এবং আলু ব্যবসায়ী সংগঠন আজ, শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে জরুরি বৈঠকে বসছেন। পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে।
আরও পড়ুন: অস্বাভাবিক দাম বেড়ে গেল ডিমের, বাজারে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠল মধ্যবিত্তের, কেন মূল্যবৃদ্ধি?
রাজ্য সরকার যদি আলু কিনেও নেয় তাহলে সেটা ন্যায্য মূল্যে কিনবে। ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী দাম নাও মিলতে পারে। ভিন রাজ্যে রফতানি করে যে মোটা টাকা মুনাফা করা হচ্ছিল সেটা মিলবে না। তাহলে আলু ব্যবসায়ীরা এমন দাবি কেন তুলছেন? উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ভিন রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি রয়েছে। আলু পাঠাতে না দিলে রাজ্য সরকার সমস্ত আলু কিনে নিক। এখন হিমঘর থেকে জ্যোতি আলুর কেজি ২৬–২৭ এবং চন্দ্রমুখী ২৮–৩০ টাকায় বের হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সব আলু অনেকটা কম দামে রাজ্যকে আমরা বেচে দেব। না হলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।’
বুধবার থেকে পুলিশ ভিন রাজ্যে আলুর ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না। আলুর ট্রাক তাই রাজ্যের সীমানায় দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে একের পর এক ট্রাক আলু দাঁড়িয়ে থাকলে আলুতে পচন ধরবে। তখন লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়বে। কারণ তখন শুধু লোকসান আলুর দাম না পাওয়ায় থেমে থাকবে না। পরিবহণ খরচও জলে যাবে। তাই ব্যবসায়ীরা এই বিপুল লোকসান থেকে বাঁচতে এখন রাজ্য সরকারকে আলু বেচে দিতে চাইছে। এই বিষয়ে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, সব বিষয় রাজ্য সরকারের নজরে আছে। আলু এবং আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে টাস্ক ফোর্স। যথাসময়ে পদক্ষেপ করা হবে।’