এবার আলু মজুত করার জন্য হিমঘরে জায়গা ফাঁকা রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে কৃষি বিপণন দফতর সমস্ত সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য হিমঘরে ৩০ শতাংশ জায়গা অবিলম্বে ফাঁকা করে রাখতে হবে। আর এই বিষয়টি সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকরা। এই ৩০ শতাংশ জায়গায় ছোট এবং প্রান্তিক কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত আলু রাখবে। আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু করে ২০ মার্চ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর।
এদিকে কৃষি বিপণন দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, একজন কৃষক সর্বাধিক ৩৫ কুইন্টাল আলু রাখতে পারবেন। সেটা যাতে সুচারুভাবে হয় তার দেখভাল করবেন জেলাশাসকরা। এই ব্যবস্থা রাজ্যে প্রথমবার চালু করা হচ্ছে। এবার প্রচুর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তাই ফলনও ভাল হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তাই ছোট–প্রান্তিক কৃষকরা হিমঘরে আলু রাখতে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফড়ে–দালালরা কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে বিপুল পরিমাণে আলু কিনে যাতে হিমঘরে মজুত করতে না পারে তাই এমন উদ্যোগ। এই ব্যবস্থার ফলে কৃষকদের ক্ষতি ঠেকানো যাবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: ভারতের নাগরিক পাকিস্তানের জেলে বন্দি, আল–কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার
অন্যদিকে প্রান্তিক কৃষকরা জেলাশাসকের কাছ থেকে তাঁদের কৃষকবন্ধু কার্ড, বাংলা শস্য বিমা যোজনার চলতি বছরের প্রমাণপত্র–সহ হিমঘরে আলু রাখার আবেদন করতে পারবেন। জেলাশাসক আগে এলে আগে মিলবে ভিত্তিতে কৃষকদের জায়গা দেবেন। এমনই নির্দেশ দিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর। তবে ২০ মার্চের পর যদি হিমঘরে নির্দিষ্ট জায়গা ফাঁকা থাকে তখন হিমঘরের মালিক তা নিজস্বভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এই ফাঁকা জায়গা থেকে যাওয়ার জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ মিলবে না। চলতি বছরে ১২টি নতুন হিমঘরে আরও ১.৩৭ লাখ মেট্রিক টন অতিরিক্ত জায়গা মিলবে আলু মজুত করার জন্য।
এছাড়া ফড়ে–দালালরা কৃষকের নাম করে হিমঘরে আলু মজুত করার চেষ্টা করতে পারে। সেটা বানচাল করতে কৃষকদের দেখাতে হবে কিষান ক্রেডিট কার্ড, কৃষকবন্ধু প্রকল্পের পরিচয়পত্র। জেলাশাসক তা দেখে তবেই আবেদনের উপর অনুমোদন দেবেন বলে খবর। কৃষককে বাংলার শস্যবিমা প্রকল্পেও নথিভুক্ত থাকতে হবে। এই বিমার প্রিমিয়াম সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারই দিয়েছে। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের ৪৯৬টি হিমঘরে মোট ৮১ লক্ষ টন আলু মজুত করা সম্ভব। তার সঙ্গে নতুন যোগ হচ্ছে ১২টি হিমঘর। এই বিষয়ে হিমঘর মালিক সংগঠনের কর্তা পতিতপাবন দে বলেন, ‘কৃষকদের জন্য ৩০ শতাংশ জায়গা কোন পদ্ধতিতে সংরক্ষিত করা হবে সেটা এখনও জানানো হয়নি। তবে কৃষকরা প্রথমে এলে হিমঘরে নিজেদের চাষের আলু তাঁরা রাখতে পারতেন আগেও।’