গত কয়েক দিনে চালের দাম বেড়েই চলেছে। গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমন ও বোরো ধানের উৎপাদন কম হয়েছিল। এ বছরও অনাবৃষ্টিতে আমন ধানের ফলন কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। তার উপর ধানের রফতানি বৃদ্ধি এবং জিএসটি চালু হওয়ার ফলে চালের দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থায় আগামী দিনে চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। মিনিকেট চালের ২৫ কেজি প্যাকেটের দাম ছিল ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা। এখন তা হয়েছে ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা। অর্থাৎ প্রায় দেড়শ টাকা বেড়েছে মিনিকেট চালের প্যাকেটে। আবার ২৫ কেজির স্বর্ণধানের চালের প্যাকেটের দাম ৬৫০ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা। চাল বিক্রেতাদের বক্তব্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ২৫ কেজির প্যাকেটে চালের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে।
রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় দুই বর্ধমান জেলায়। পূর্ব বর্ধমান রাইস টেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, গত বছর পূর্ব বর্ধমানে আমন ধানের উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমেছে। আগে প্রতিদিন পূর্ব বর্ধমানে ৩০ হাজার টন চাল উৎপাদন হত। এখন ১০ হাজার টন উৎপাদন হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চালের উৎপাদন কতটা কমেছে তা অনুমান করা যাচ্ছে। এ বছর আবার বৃষ্টি ভালো না হওয়ায় আমন ধানের ফলন কেমন হবে তা নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন চাষিরা। তাদের বক্তব্য, গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমন ধানের ফলন ভালো হয়নি।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, রাজ্যে চাল উৎপাদন কম হওয়া সত্ত্বেও বিদেশে চালের ভালই চাহিদা রয়েছে। ফলে বাইরে চাল রফতানি করা হচ্ছে। এর জন্য রাজ্যের বাজারে চালের জোগান কমছে। পাশাপাশি অনেক কৃষক এ বছর বাড়িতে ধান মজুদ রেখেছেন। কারণ এবছর ধানের ফলন নিয়ে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। সেই কারণে তারা ধান বিক্রি করতে চাইছেন না। আবার অনেক ব্যবসায়ী চালের দাম আরও বেশি বাড়ার আশায় গুদামে চাল মজুদ রেখে দিচ্ছেন। চালকল মালিক সমিতির রাজ্যের কার্যকারী সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, একাধিক কারণে চালের চাহিদা ও যোগানের পার্থক্য হওয়ায় দাম বাড়ছে। অনেকেই আবার ২৫ কেজির প্যাকেট পর্যন্ত চালে জেএসটি চালু নিয়ে দাম বাড়ার কথা বলছেন।