প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় প্রায় ৫৯,০০০ শিক্ষকের মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নম্বর বিভাজন-সহ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ৫৯,০০০ শিক্ষকের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করতে হবে। যাঁরা ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন।
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট নিয়ে ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দু'দফায় যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল, তাতে প্রচুর অযোগ্য প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। মেধাতালিকায় অনেকটা পিছনে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা বহাল তবিয়তে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করছেন। অথচ তাঁদের থেকে ঢের বেশি নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও প্রচুর যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: Primary TET Scam: ১,০০০ কোটির প্রাথমিক TET ‘দুর্নীতি’ - শিক্ষকদের তথ্য তলবের পথ প্রশস্ত হয় আগেই
সেই মামলার শুনানিতে শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সকলের মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাতে নম্বর বিভাজন, কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর, ইন্টারভিউয়ে প্রাপ্ত নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মেধাতালিকা প্রকাশের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে সময়ও বেঁধে দিয়েছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পর্ষদকে সেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। অর্থাৎ পর্ষদের হাতে দু'মাস সাতদিন মতো সময় আছে।
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের ইতিবৃত্ত
২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। ২০১৫ সালে হয়েছিল। পরীক্ষা সেই পরীক্ষার ভিত্তিতে দু'দফায় নিয়োগ হয়েছিল। প্রথম দফায় ২০১৬ সালে নিয়োগ করেছিল পর্ষদ। সেই দফার নিয়োগ নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ না থাকলেও দ্বিতীয় দফার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (২০২০ সালে হয়েছিল) লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Primary TET Scam: অকল্পনীয় দুর্নীতি! প্রাথমিক TET-এ CBI রিপোর্ট দেখে বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
মামলাকারীদের দাবি ছিল, ২০১৪ সালের টেটের প্রশ্নপত্রে ভুল থাকা নিয়ে সেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো সেই নম্বর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিয়ম মেনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে নম্বর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। মামলাকারীদের দাবি, অযোগ্য প্রার্থীদের নম্বর দিয়ে নিয়োগ করা হয়েছিল। অথচ যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। চলতি বছর প্রচুর শিক্ষকের চাকরি চলে যায়। তৎকালীন প্রাথমিক পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য অপসারণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।