পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে মালদায় এনে রোড–শো এবং বড় মাপের জনসভা করাতে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেসের ওই আবেদনে সম্মতি দিয়েছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। তবে কবে আসবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি বলেই সূত্রের খবর। এদিকে ভারত জোড়ো যাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পাশে চান রাহুল গান্ধী। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের কুর্সি থেকে নরেন্দ্র মোদীকে হটাতে ভারত জোড়ো যাত্রা অনুঘটকের কাজ করছে বলেই মনে করছে কংগ্রেস। তাই ভারত জোড়ো যাত্রায় অবিজেপি দলের নেতৃত্বকে যোগদানে আহ্বান জানানো হয়েছে বলেই জানিয়েছেন এআইসিসি’র মুখপাত্র কে সি বেণুগোপাল।
অন্যদিকে মালদার মতো এক সময়ের দুর্গ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে মরিয়া হয়েই কংগ্রেস এখন বড় কর্মসূচি নিতে চাইছে। তবে বড় মাপের নেতা–নেত্রীকে এনে চমক দেওয়া সম্ভব হলেও, ভোটে নতুন করে কংগ্রেসের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কতটা সম্ভব তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এই পরিস্থিতিতে ভারত জোড়ো যাত্রায় তৃণমূলকে পাশে চাওয়ায় জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তৃণমূলের সাংসদদের আগেই এই বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে এআইসিসি’র মুখপাত্র বলেন, ‘এবার তৃণমূলনেত্রীকেও আহ্বান জানানো হয়েছে। একইভাবে অখিলেশ যাদব, মায়াবতীর মতো উত্তরপ্রদেশের অবিজেপি নেতা–নেত্রীদেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। সমমনষ্ক সমস্ত অবিজেপি দলকেই ভারত জোড়ো যাত্রায় ডাকা হয়েছে।’
প্রিয়াঙ্কা কবে মালদায় আসছেন? মালদা জেলা কংগ্রেসের অন্যতম নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক অর্জুন হালদার বলেন, ‘আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে জেলায় ভারত জোড়ো কর্মসূচি পালন করব। তবে এই কর্মসূচিতে মূলত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বই অংশ নেবে। সঙ্গে থাকবে জেলার নেতারা। আমাদের মূল লক্ষ্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে মালদায় এনে রোড শো এবং বড় জনসভা করার। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মালদা দক্ষিণের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু) নিজে এই নিয়ে কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে মালদায় পাঠানোর অনুরোধে সম্মতিও দিয়েছে। তবে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সফরের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
ঠিক কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? কানাইয়া কুমার অথবা ইমরান প্রতাপগারহিকে ওই সভায় আনার চেষ্টা চলছে। পরপর দু’টি বড় মাপের কর্মসূচি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতেই নেওয়া হচ্ছে। জেলা কংগ্রেস সূত্রে খবর, ১৬ এবং ১৭ জানুয়ারি বৈষ্ণবনগর, সুজাপুর এবং ইংলিশবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার সমর্থনে কর্মসূচি নিচ্ছে কংগ্রেস। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘এই জেলায় কংগ্রেস এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। মালদার মানুষ বুঝে গিয়েছেন উন্নয়নের ব্যাটন এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়েও তিনিই একমাত্র নির্ভরযোগ্য মুখ। ফলে নেতা–নেত্রীদের এনে দলের জমি উদ্ধার কংগ্রেসের পক্ষে আর নতুন করে সম্ভব নয়।’