পুজোর মুখে বন্ধ হয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনার কাকিনাড়ার একটি জুট মিল। তারফলে কর্মহীন হয়ে পড়লেন কারখানার প্রায় তিন হাজার স্থায়ী অস্থায়ী শ্রমিক। শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের জেরে কাকিনাড়ার নফর চাঁদ জুট মিলে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পুজোর মুখে কর্মহীন হয়ে পড়ায় দিশেহারা শ্রমিকরা। আজ শনিবার মিলের ভিতরে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তারপরে উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ‘জুট ব্যাগের বরাতের পরিমাণ ১০০ শতাংশ করা হবে’, কেন্দ্রের বিবৃতিতে খুশি সাংসদ
অভিযোগ, শ্রমিকদের নতুন বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। যারফলে পুরানো বিভাগ থেকে নতুন বিভাগে গিয়ে তারা কাজ করতে পারছেন না। এনিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাতে গেলেই রিজাইন দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন তারা। পাশাপাশি আগামী ২ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই দুটি ইস্যু নিয়ে শনিবার শ্রমিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষোভকারী এক শ্রমিককে গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে সাহেবের বিরুদ্ধে। এরপর ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে মিলের ভেতরে এবং অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। উত্তেজনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় ভাটপাড়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
বিকাশ রাও নামে এক শ্রমিকের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে যে বিভাগে কাজ করছিলেন সেখান থেকে তাকে অন্য বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে কাজ একেবারে নতুন হওয়ায় তিনি ঠিকমতো পারছিলেন না। সেই কারণে তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পুজোর মুখে কাজ চাইতে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। তাকে গালিগালাজ করার পাশাপাশি ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তাতেই এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। কারখানায় বিক্ষোভের পর এদিন শ্রমিকরা ভাটপাড়া থানায় যান সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে।
প্রসঙ্গত, কাঁকিনাড়ার এই মিলে শ্রমিক অসন্তোষ এই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই জুট মিল। গত ডিসেম্বরেও একইভাবে কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। তার জেরে তুমুল শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়েছিল মিলে। তখন সেই কাজ বন্ধ রাখা হয়। তবে পুজোয় যেখানে সকলে নতুন পোশাক কিনে থাকেন সেই জায়গায় শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়াই স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়েছে তাদের পরিবার।