তৃণমূলের শুরু থেকে দলের সঙ্গে রয়েছেন তিনি। পরপর দু’বার নন্দকুমারের বিধায়ক হয়েছেন সুকুমার দে। আর এখন তাঁর অভিযোগ, তাঁর কথাতে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এমনকী পিকে–র দলের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, যে আইপ্যাকের সদস্যদের কথায় তিনি বহুবার অপমানিত হয়েছেন। আর এবার তাঁকে হারাতে হল ব্লক সভাপতির পদ। বুধবার পদ খুইয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না নন্দকুমারের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে। দলীয় সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ সুকুমারবাবু নয়া ব্লক সভাপতিকে মানতে নারাজ। এভাবেই ফের পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল প্রকাশ্যে উঠে এল।
বুধবারই ছিল তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি ঘোষণা। জেলা কমিটির ব্লকস্তরের নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়। সেখানে নন্দকুমার ব্লকের সভাপতি ছিলেন বিধায়ক সুকুমার দে। নতুন কমিটিতে তাঁকে সরিয়ে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে সুকুমার বেরাকে। এ নিয়ে রীতিমতো চোখে জল নিয়ে ক্ষোভ জানালেন সুকুমার দে। এদিন তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন।
ছলছল চোখে সুকুমারবাবু বলেন, ‘দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা–ই করেছে। এখানে আমার কিছু বলার নেই। আমার সিদ্ধান্ত আমি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাবো। ইতিমধ্যে আমার যে মূল নেতৃত্ব তাঁকে আমি এ ঘটনার কথা জানিয়েছি।’ এদিন সুকুমারবাবু বলেন যে প্রয়োজনে তিনি দলও ছেড়ে দিতে পারেন। আর এই দল ছাড়ার কথা বলতে গিয়েই কেঁদে ফেলেন নন্দকুমারের বিধায়ক। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘প্রয়োজনে দল ছাড়তে হবে। আমি যদি সম্মান না পাই, কী করব!’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুদিন ধরেই সুকুমার দে–র সঙ্গে সুকুমার বেরার দ্বন্দ্ব চরমে। এদিন শিশির অধিকারী নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করার পর যখন সুকুমার দে দেখেন যে তাঁর নাম সেখানে নেই তখনই তিনি সুব্রত বক্সিকে এ কথা জানান। এবং পাশাপাশি ‘আর এক নেতা’কে তিনি এ ব্যাপারে অবগত করেন। এই ‘নেতা’ কি শুভেন্দু অধিকারী? তা অবশ্য খোলসা করতে চাননি সুকুমারবাবু। তিনি জানান, সেই ‘নেতা’ যা বলবেন তা–ই করবেন তিনি। তাঁর নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন সুকুমার দে।
আর এ ব্যাপারে সদ্যনিযুক্ত ব্লক সভাপতি সুকুমার বেরার দাবি, ‘নতুন প্রজন্ম হিসেবে আমি সুকুমার দে–র হাত ধরে তাঁকে দলে নিয়ে এসেছিলাম। আমি খুশি তিনি বিধায়ক হয়েছেন। কিন্তু তিনি যে এভাবে আমার বিরোধীতা করছেন, তাতে আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি ওঁর সুমতি হোক।’