বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > রুক্ষ টিলা ঢাকল সবুজ গালিচায়, বন সৃজনের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেল পুরুলিয়ার গ্রাম

রুক্ষ টিলা ঢাকল সবুজ গালিচায়, বন সৃজনের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেল পুরুলিয়ার গ্রাম

রুক্ষ টিলায় সবুজের সমারোহ ঘটিয়ে বন সৃজনের অভিনব নজির গড়ল পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম ঝাড়বাগদা।

বন সৃজনের অভিনব নজির গড়ল পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম ঝাড়বাগদা।

একদা অহল্যাভূমি পরিণত হল সবুজ বনে। প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহ দূর হয়ে দেখা দিল শ্যামলিমার স্নিগ্ধতা। বন সৃজনের অভিনব নজির গড়ল পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম ঝাড়বাগদা।

সীমাহীন অরণ্য নিধনের জেরে নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিক পর্যন্ত রুক্ষ, শুকনো ও অনুর্বর ছিল ঝাড়বাগদা। গ্রামের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো তিন ন্যাড়া টিলায় গজাত না একটি ঘাসও। শুধু একটি টিলার উপরে কোনও মতে দাঁড়িয়েছিল এক তালগাছ। 

গ্রীষ্মে তাপমাত্রা উঠে যাত ৪৭-৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রোদের খর তাপে শুকিয়ে যেত পুকুর-দীঘি, জলস্তর নেমে গিয়ে বিকল হত টিউবওয়েল। জলের অভাবে ধুঁকতে থাকার জমিতে ফলত না ফসল। পানীয় জল আনতে প্রায় দুই কিমি হেঁটে যেতেন গ্রামের মহিলারা। জ্বালানির জন্য কাঠকুটো কুড়োতে হাঁটতে হত ৫ কিমি। 

আবার বর্ষায় পাথুরে টিলা বেয়ে জলের স্রোত নেমে এসে ভাসিয়ে দিত জমিজমার উর্বরতা। দশকের পর দশক ধরে অবিরাম সবুজ ধ্বংসের খেসারত দিতে এমনই দুর্দিনের সাক্ষী থেকেছেন ঝাড়বাগদার বাসিন্দারা।

অবিরাম সবুজ ধ্বংসের খেসারত দিতে এমনই রুক্ষ অনুর্বর হয়ে উঠেছিল ঝাড়বাগদা।
অবিরাম সবুজ ধ্বংসের খেসারত দিতে এমনই রুক্ষ অনুর্বর হয়ে উঠেছিল ঝাড়বাগদা।

১৯৯৮ সালে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে বলে মনস্থ করেন গ্রামবাসী। রুক্ষ প্রকৃতির রূপ বদলের আশায় তাঁরা টেগোর সোসাইটি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট নামে এক এনজিও-র শরণাপন্ন হন। ওই সংস্থা তত দিনে ঝাড়খণ্ডে বেশ কিছু সবুজায়ন প্রকল্প গড়তে সফল হয়েছে। 

ঝাড়বাগদা সবুজায়ন প্রকল্পের প্রধান নন্দলাল বকশির মতে, ‘আমাদের গোড়াথেকে শুরুকরতে হয়েছিল, কারণ ওই অঞ্চল পুরোপুরি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিল। সবুজ ফিরিয়ে আনার জন্য পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি হল। সেই সঙ্গে জলের ধারায় ক্ষয় রোধ করা, ভূগর্ভের জলস্তরের উন্নতিসাধন এবং গাছ বাঁচাতে জলস্তরের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য সবিস্তারে পরিকল্পনা তৈরি করা হল। প্রকল্পের কাজে আমাদের সঙ্গে গ্রামবাসীরা ঝাঁপিয়ে পডলেন। ১৯৯ সাল থেকে শুরু হল কাজ।’

পরবর্তী ৫-৬ বছরে তিন টিলা জুড়ে ৩০০ একর জমিতে প্রায় ৭৫ প্রজাতির তিন লাখের বেশি গাছের চারা বসানো হল। চারাগুলি যাতে কোনও মানুষ বা গবাদি পশুর দ্বারা নষ্ট না হয়, সে দিকে কড়া নজর রাখলেন গ্রামের ৪০০-৪২৫টি বাড়ির বাসিন্দা। 

পুরুলিয়ায় বছরে গড়ে ১১০০-১৫০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু অসমান জমির কারণে বৃষ্টির জল কোথাও দাঁড়াতে পারে না ও রুক্ষতাদূর হয় না। কিন্তু বন সৃজনের ফলে গাছ-গাছালি বেড়ে যাওয়ায় এখন টিলা থেকে আশপাশের অনুর্বর জমিতে সবুজের বন্যা বয়ে গিয়েছে। 

বকশি জানিয়েছেন, ‘টিলা বেয়ে বষ্টির জল বয়ে যাওয়া আটকাতে আমরা সব পাহাড়ি নালার মুখ বন্ধ করে দিই। টিলার মাথায় গভীর গর্ত খুঁড়ে জল সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করা হয়। গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে জমির চরিত্র বুঝে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় কাঠ, জ্বালানি, পশুখাদ্য ও ফলদায়ী প্রজাতিকে।’

প্রতি বছর কয়েক মাস টিলার বনে এসে ঘাঁটি গাড়ে প্রায় ডজনখানেক হাতির একটি দল।
প্রতি বছর কয়েক মাস টিলার বনে এসে ঘাঁটি গাড়ে প্রায় ডজনখানেক হাতির একটি দল।

চারাগুলি চটপট গাছ হয়ে দাঁড়াতেই জমির রুক্ষতা দূর হয় ও ভূমিক্ষয় রোধ হয়। এর জেরে চাষবাসের হাল ফেরে। কৃষকরা ধান ও মরসুমি শস্য ফলানোর হার বাড়াতে পারেন। ন্যাড়া জমিতে ঘাস গজানোর ফলে গবাদি পশুর স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হতে থাকে। 

জ্বালানির কাঠকুটোর জন্য এখন টিলার জঙ্গলেই ভরসা রাখেন গ্রামের মহিলারা। পুকুরে পর্যাপ্ত জলের জোগান তাঁদের দৈনিক দুই কিমি হাঁটার কষ্ট দূর করেছে। এমনকি বন্য পশুদের জন্য টিলার জঙ্গলের ভিতরেও একটি পুকুর কেটে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। সেই পুকুরের জল শুধুমাত্র বন্যদেরই তৃষ্ণা নিবারণ করে। 

বন সৃজনের ফলে গ্রীষ্মে সহনীয় হয়েছে ঝাড়বাগদার তাপমাত্রা। আগের তুলনায় ৪-৫ ডিগ্রি গরম কম পড়ে ইদানীং, স্বীকার করেছেন বাসিন্দারা। 

শুধু মানুষই নয়, রুক্ষ টিলায় জঙ্গল গজিয়ে উঠলে তাতে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য বন্যপ্রাণ। বুনো শুয়োর, শেয়াল, বুনো খরগোস ছাড়াও বেশ কিছু প্রজাতির পাখি সেখানে পাকাপাকি বসবাস শুরু করেছে। বছরের কয়েক মাস সেই বনে এসে ঘাঁটি গাড়ে প্রায় ডজনখানেক হাতির একটি দল। 

বন সৃজনের এই সফল বিকাশ দেখতে প্রতি বছর ঝাড়বাগদার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে একাধিক জাপানি সংস্থা। প্রকল্পের খরচ জোগাতে তাদের আর্থিক অনুদান গুরুত্বপূর্ণ। তারই প্রভাবে টিলার নাম ম্যাকিনো-রঘুনাথ পাহাড় দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও এনজিও সংস্থা।

বাংলার মুখ খবর

Latest News

'আরও রিসার্চ...' ভুলে ভরা অজয়ের ময়দান! তথ্য বিকৃতির অভিযোগ ফুটবলারদের পরিবারের ‘‌কংগ্রেস রাজপুত্রের জন্য খুঁজতে হবে আরও একটি নিরাপদ আসন’‌, কটাক্ষ মোদীর প্যান্ট নামিয়ে টোনড অ্যাবস ফ্লন্ট, ডায়েটে ঘি-এর সঙ্গে আর কী খান, জানালেন সাবা বার্ডফ্লু ভাইরাসের H5N1 স্ট্রেইন মিলল দুধে! উদ্বেগের পারদ চড়িয়ে জানাল WHO বৃহস্পতির বৃষ রাশিতে গমন, সংকট বাড়বে এই ৩ রাশির, হতে পারে আর্থিক ক্ষতি কংগ্রেসকেই ভোট দিন! বিজেপিতে যোগদান করার ১৯দিনের মধ্যেই ডিগবাজি খেলেন মেয়র কাকভোরে বিস্ফোরণ, উড়ে গেল গয়নার দোকানের শাটার, ভিতরে কী চলছিল? পরমব্রতকে বিয়ের ৫ মাস! ঝলক বেডরুমের, বিছানায় শুয়ে পিয়া, আদর খেলেন মন ভরে বেবি বাম্প আগলে রাজা-ঘরণী, দ্বিতীয়বার মা হচ্ছেন? HT Bangla-কে জানালেন মধুবনী আশা করি বিশ্বকাপের দলে নির্বাচকরা ওকে ভুলে যাবে না, KKR তারকার হয়ে সওয়াল সঞ্জয়ের

Latest IPL News

আশা করি বিশ্বকাপের দলে নির্বাচকরা ওকে ভুলে যাবে না, KKR তারকার হয়ে সওয়াল সঞ্জয়ের পেস বোলিংয়ের প্রফেসর:- বুমরাহর ভূয়সি প্রশংসা প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান তারকার ২৪.৫ কোটির স্টার্ককে ধর্তব্যে আনলেন না,বেয়ারস্টোর ফেভারিট তালিকায় ২ MI ক্রিকেটার কবে ঘোষিত হবে ভারতের T20 বিশ্বকাপের দল, কাদের জায়গা পাকা, মিলল বিরাট ইঙ্গিত মাত্র ১৩ বলেই ইতিহাস, IPL-এ এমন এক রেকর্ড গড়লেন ধোনি, যা কল্পনাও করা যায় না আইপিএলে ব্রাত্য হয়ে এবার পূজারার পথে কাউন্টিতে নাম লেখালেন ভারতীয় পেসার শ্রবণশক্তি হারাতে পারেন! ধোনি মাঠে নামতেই ডি'ককের স্ত্রীর ঘড়িতে নয়েজ অ্যালার্ট ধোনি ব্যাট করতে এলেই বোলাররা ভয় পেয়ে যায়, অকপট রাহুল কেন ভারতের সেরা ফিল্ডার, বোঝালেন আরও একবার,KL-কে ফেরাতে অবিশ্বাস্য ক্যাচ জাদেজার জয়ের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে নিয়ম ভেঙেছে ২ দল, লোকেশ ও রুতুরাজকে উচিত শিক্ষা দিল BCCI

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.