বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > মাফলার দিয়ে কানে ফোন বেঁধে প্রেমিকের নির্দেশে স্বামীকে লিঙ্গ কেটে খুন করল স্ত্রী

মাফলার দিয়ে কানে ফোন বেঁধে প্রেমিকের নির্দেশে স্বামীকে লিঙ্গ কেটে খুন করল স্ত্রী

প্রতীকি ছবি

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ফোন দিয়ে ক্ষেত্রপালের সঙ্গে উত্তরা যোগাযোগ রাখতেন সেটি উদ্ধার হয়েছে। ফোন ও সিম ক্ষেত্রপালই উত্তরাকে কিনে দিয়েছিলেন। সেই ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত, একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই মহিলার।

পরকীয়ায় বাধা হয়ে ওঠায় প্রেমিকের সাজানো ছকে স্বামীকে খুন করেছেন স্ত্রী। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর লিঙ্গ কেটে খুন করা হয়েছে তাঁকে। পুরুলিয়ার জয়পুরে আদিবাসী প্রৌঢ় জুড়ন মাহাতো খুনের ১৬ দিন পর এমন তত্ত্ব খাড়া করল পুরুল্যা জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার হেফাজতের মেয়াদ শেষে ধৃত স্ত্রী উত্তরা মাহাতোকে আদালতে পেশ করে এই দাবি করেছে তারা। ইতিমধ্যে উত্তরার প্রেমিক ক্ষেত্রপাল মাহাতোকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গত ২০ মার্চ হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান জয়পুরের রাঙুনিটাড় গ্রামের বাসিন্দা জুড়ন মাহাতো। স্ত্রী উত্তরা জানান, স্বামী ঝালদায় হাটে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। ২ দিন পর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ২৫ মার্চ নিহতের ছেলে অপূর্ব মাহাতো পুলিশকে জানায়, বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। এর পর পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে জুড়নবাবুর পচনধরা দেহ উদ্ধার করে। ২৬ মার্চ অপূর্বর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে উত্তরাকে। আদালত ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

জেরায় উত্তরা জানায়, জয়পুরের শিলফোড় গ্রামের বাসিন্দা ক্ষেত্রপাল মাহাতোর সঙ্গে ৫ বছর ধরে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল তাঁর। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ক্ষেত্রপাল গোয়ায় কর্মরত। সম্প্রতি পরকীয়ার কথা জেনে ফেলেছিলেন স্বামী জুড়ন। যার ফলে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া মুশকিল হচ্ছিল। পথের কাঁটাকে সরাতে জুড়নকে খুন করেছেন তিনিই।

খুনি স্ত্রী উত্তরা আরও জানিয়েছেন, ১৯ মার্চ রাতে স্বামীকে ডিমের ঝোলের সঙ্গে ২৫টি ঘুমের ওষুধ খাওয়ান তিনি। জুড়ন নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাঁকে বাটখারা দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এর পর ব্লেড ও ধারালো ছুরি দিয়ে জুড়নের লিঙ্গ কেটে ফেলেন তিনি। এর পর নুন মাখিয়ে দেহ বস্তায় ভরেন। তার পর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেন সেই বস্তা। অভিযুক্ত জানিয়েছে, গোটা ঘটনার সময় মাফলার দিয়ে মোবাইল ফোনটি কানের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন তিনি। ফোনের ওপারে ছিলেন প্রেমিক ক্ষেত্রপাল। তাঁর নির্দেশেই স্বামীকে খুন করার পর দেহ লোপাট করেন তিনি। এর পর প্রমাণ নষ্ট করতেও তাঁকে সাহায্য করেন যুবক।

পুরুল্যার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে অস্ত্র দিয়ে গোপনাঙ্গ কাটা হয়েছিল তা পুলিশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তে গোপনাঙ্গ কাটার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষেত্রপাল মাহাতোকে জয়পুর থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।’ 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ফোন দিয়ে ক্ষেত্রপালের সঙ্গে উত্তরা যোগাযোগ রাখতেন সেটি উদ্ধার হয়েছে। ফোন ও সিম ক্ষেত্রপালই উত্তরাকে কিনে দিয়েছিলেন। সেই ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত, একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই মহিলার। 

 

বন্ধ করুন