গতবছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের সমস্ত মৎস্যজীবীকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। তার জেরে আগামী দিনে নানান ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন তাঁরা। গত দুয়ারে সরকারের সময় রাজ্যজুড়ে আবেদন নেওয়া হয়েছিল। নথিভুক্ত করা হয়েছিল সবার নাম। এবার সেই সব পরিচয়পত্র বণ্টন শুরু হল। সব মিলিয়ে সাড়ে ছ’লক্ষেরও বেশি কার্ড বিতরণ করা হবে। কার্ডের মালিকের যাবতীয় তথ্য জানার জন্য তাতে রয়েছে কিউআর কোড। সুতরাং কার্ডে ছাপানো অক্ষর অস্পষ্ট হয়ে গেলেও কোড থাকার কারণে সেটি স্ক্যান করলে সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবীর সমস্ত তথ্য জানা যাবে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মাছ উৎপাদনে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে থাকলেও, সর্বাধিক নথিভুক্ত মৎস্যজীবী রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে। আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ সেবা দ্রুত ও কার্যকরভাবে পৌঁছনোর উদ্দেশে নন্দীগ্রাম–১ ব্লক মৎস্য বিভাগ ‘মৎস্য বিভাগ নন্দীগ্রাম–১’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করেছে। তার মাধ্যমে কোন মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবি, নব মৎস্য–উদ্যোক্তা এবং অন্য কোনও ব্যক্তি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রবেশ করে মৎস্য দফতরের বিভিন্ন প্রকল্প, নির্দেশিকা এবং চাষের যাবতীয় তথ্য পাবেন। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কিউআর কোড পোস্টারের শুভ উদ্বোধন করেন নন্দীগ্রাম–১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুক্তিরানী মাইতি।
ঠিক কী তথ্য দক্ষিণ ২৪ পরগণায়? এই জেলায় পরিচয়পত্র পাবেন দু’লক্ষ ২৬ হাজারেরও বেশি মৎস্যজীবী। পূর্ব মেদিনীপুরে এই সংখ্যা দু’লক্ষ চার হাজারের কিছু বেশি। এতদিন মৎস্যজীবীদের জন্য কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এবার তা হওয়ায় ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে সুবিধা হবে। নাম নথিভুক্ত থাকার ফলে কোনও দুর্ঘটনা কিংবা সমস্যা হলে, সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবীর ব্যাপারে সব তথ্য এক জায়গায় থাকবে। এমনকী সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা নিতে পারবেন। যে সব মৎস্যজীবী ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন অথচ কার্ড হাতে পাননি, তাঁদের নতুন করে আবেদন করতে হবে না বলে জানিয়েছেন অফিসাররা। তা করলে আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে।
আর কী জানা যাচ্ছে? দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কিউআর কোড পোস্টার লাগানো হয়েছে। যাতে সহজেই মাছ চাষিরা যুক্ত হতে পারেন। আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ করতেই এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই বিষয়ে নন্দীগ্রাম–১ ব্লক মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, ‘মৎস্য সম্প্রসারনের উদ্দেশে যেমন প্রত্যন্ত গ্রামে বৈঠক করছি তেমনি মৎস্য দফতরের বার্তা নির্দেশিকা–সহ প্রতিনিয়ত উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রযুক্তি মৎস্য চাষি, মৎস্যজীবী এবং নব মৎস্য–উদ্যোক্তাদের কাছে আরও সহজে ও দ্রুত পৌঁছে দিতে এই মৎস্য বিভাগ নন্দীগ্রাম–১ নামক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গঠন করা হয়েছে এবং মৎস্য দফতরের কার্যালয়–সহ দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কিউআর কোড পোষ্টার লাগানো হয়েছে।’