তাঁরা দু’জনেই যুযুধান প্রতিপক্ষ। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। তার মধ্যেই একজন চরম হঁশিয়ারি দিয়ে বসলেন। আর তাতেই রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড়। নাটাবাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি নিয়ে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের উদ্দেশে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘ওর বাপের দম আছে? যাঁরা মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিদের পা ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন তাঁরা গুন্ডা, তাঁরা মস্তান। তাঁদের থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।’
বিজেপি সাংসদের উদ্দেশে সেই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ বৃহস্পতিবার নাটাবাড়ির জনসভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর নাম না করে নিশীথ প্রামানিক বলেন, ‘অনেক অত্যাচার সহ্য করছি। আর মেনে নেব না। লম্বা দানবটা যদি নাটাবাড়ির মাটিতে ঢোকে পা ভেঙে দেবেন। যদি একবার নাটাবাড়িতে ঢোকেন, তাহলে পা ভেঙে দেবেন।’ জনতার উদ্দেশে এই কথা বলার পরই পালটা দেওয়ার ছক কষে রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তারপরই সুযোগ বুঝে তিনিও জনতার সামনে বিজেপি সাংসদের উদ্দেশে পালটা মন্তব্য করেন। সঙ্গে ছিল চরম হুঁশিয়ারিও।
এমনকী নিশীথ প্রামাণিক রাজবংশী নন বলে দাবি করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর দাবি, বিজেপি সাংসদ যে রাজবংশী সম্প্রদায়ের লোক, এমন কোনও কাগজ দেখাতে পারবেন না। মন্ত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও কাগজ দেখানোর বিপক্ষেই আন্দোলন করছে। তাহলে বিজেপি সাংসদের কাছে কী করে কাগজ দেখতে চাইলেন মন্ত্রী? বিতর্ক যখন তুঙ্গে তার মধ্যেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘কোচবিহার বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহারের রাজাদের পাগড়ি পরে জেলাবাসীর ভাবাবেগে আঘাত করছেন।’
পালটা নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কোচবিহার জেলা তৃণমূলের পদ খুইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। কোনওদিন দেখা হলে রাজবংশী প্রমাণের কাগজ দেখিয়ে দেব। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। রাজবংশীদের কৃষ্টি সংস্কৃতি এমন পাগড়ি। যে পাগড়ি পরা হয়েছে, সেটা কোচবিহার রাজাদের নয়। মন্ত্রী আমাদের রাজবংশীদের সংস্কৃতি জানেন না।’ ব্যস, বাক্যবাণের পাল্টা বাক্যবাণ ছুটে আসায় এখন জেলাজুড়ে তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিবেশ।