বাংলাদেশে কি অশান্তি ছড়াচ্ছে মৌলবাদী সংগঠন? বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে, তাতে কি কলকাঠি নাড়ছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)? এমনই প্রশ্ন তুলে দিলেন ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব তথা বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বাংলাদেশের কোটা-বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই সংবাদসংস্থা এএনআইয়ে সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব জানান, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ নিয়ে পড়ুয়ারা যে দাবি তুলছেন, সেটা নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে। পড়ুয়াদের দাবিপূরণ করার বার্তা দিচ্ছে। সেটার প্রভাবও পড়েছে পড়ুয়াদের আন্দোলনে। কিন্তু পড়ুয়াদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, সেটার ফায়দা তুলে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমেছে কয়েকটি সংগঠন।
পড়ুয়াদের দাবি নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ হাসিনা সরকারের
ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব বলেন, 'সরকার তুলে ধরেছে যে (সংরক্ষণের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে)। পড়ুয়ারা বিক্ষোভে নেমেছেন, কারণ তাঁদের মনে হয়েছে যে কোনও না কোনও শ্রেণির মানুষের জন্য ৫৬ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থাকায় সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সুযোগ কমছে। বিশেষত মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের (সংরক্ষণ নিয়ে আপত্তি আছে তাঁদের)। সরকার বলছে যে আমরা সম্পূর্ণভাবে সহমত পোষণ করছি। সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু বিষয়টি উচ্চতর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।'
হাসিনার ভূমিকার প্রশংসায় শ্রিংলা
তিনি আরও বলেন, ‘(হাসিনা সরকার বলছে যে) আর সেটার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে জনসক্ষমে এসে বলেছেন যে আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। তোমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি আমরা। কিন্তু বিষয়টি আদালতে ঝুলে আছে। সেই বিষয়ে আদালতকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জি জানাব আমরা।’
'সরকারের পদক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে বাংলাদেশে'
ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব বলেন, ‘পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। আর আমি এটাও শুনতে পাচ্ছি যে সরকার পরোক্ষভাবে বলেছে যে এই রবিবারই বিষয়টি কিছু চূড়ান্ত নিতে পারে আদালত। সেটার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে শুনছি। আমি শুনতে পাচ্ছি যে সংঘর্ষের ঘটনা কমেছে।’
বাংলাদেশের হিংসায় কি মদত মৌলবাদী ও ISI-র?
ভারতের প্রাক্তন বিদেশ সচিব বলেন, ‘বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানতে পারছি যে এই বিষয়ে নাক গলাচ্ছে বিভিন্ন মহল। জামাত-ই-ইসলামির অংশ ছাত্র শিবিরের মতো মৌলবাদী সংগঠন ঢুকে পড়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। যা এই বিক্ষোভের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিষয় যুক্ত করেছে।’
আরও পড়ুন: মিছিল–সমাবেশে জারি নিষেধাজ্ঞা, অগ্নিগর্ভ ঢাকা, বাতিল করা হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস
সেইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আইএসআই মতো বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক অংশও যুক্ত থাকতে পারে। মানে এরকম রিপোর্ট শুনতে পাচ্ছি। সেটা ঠিক বা বেঠিক, সেটা তদন্ত চালিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। তবে হ্যাঁ, এই পরিস্থিতির ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন লোকজন। আর ঘোলাজলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন।’