বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > বাবা লরি চালান, মাধ্যমিকে একাদশ স্থানে ভাতারের রাহুল, এবার ডাক্তার হওয়ার লড়াই

বাবা লরি চালান, মাধ্যমিকে একাদশ স্থানে ভাতারের রাহুল, এবার ডাক্তার হওয়ার লড়াই

রাহুল দাস, মাধ্যমিকে একাদশ। (সংগৃহীত)

একেবারে হীরের টুকরো ছেলে। মাটির বাড়ির এককোণে রাতদিন এক করে পড়াশোনা করেছে রাহুল। ভাতার বাজারের কাছে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত সে। বাকিটা কঠিন অধ্যাবসায় রাহুল দাসের।

হার না মানা জেদ আর কঠিন অধ্যাবসায়। ভাতারের বেলেন্ডা গ্রামের ছাত্র রাহুল দাস এবার মাধ্যমিকে একাদশ স্থান দখল করেছে। সে ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলের ছাত্র। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০। তবে এই যে সাফল্যের পথ এটা একেবারেই সহজ ছিল না। বাবা লরি চালক। রাস্তাতেই কেটে যায় দিনের পর দিন। ছেলেকে সময় দেওয়ার মতো সময় তাঁর নেই। ঘরেতে নিত্য অভাব।

 রাহুলের প্রাপ্ত নম্বর অঙ্কে ১০০, ভূগোলে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৭, বাংলায় ৯৭, ইংরাজিতে ৯৩ নম্বর। পড়ার মাঝে গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসে রাহুল।

রাহুলের মা করুণা দাস জানিয়েছেন, অভাবের সংসার। তবে ছেলেকে পড়াশোনার জন্য কোনওদিন আলাদা করে বলতে হয়নি। ছেলের ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে। তবে আদৌ সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না জানা নেই।

তবে কঠিন প্রতিকূলতার মধ্যেও জীবনযুদ্ধের স্টিয়ারিংটা একবারও ছাড়েননি রাহুল। বাবা যখন অন্যের লরি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন তখন রাহুল ঘাড় গুঁজে লেখাপড়া করত।

মাটির বাড়ির নিকানো উঠোন। দিনের বেলা সেই উঠোনেও পড়াশোনা করত রাহুল। আর অন্যসময় ঘরের মধ্যেই পড়াশোনায় মন দিত রাহুল। বরাবরই স্কুলে ভালো ফল করত সে। তবে আর্থিক পরিস্থিতি বার বার বাধা হয়ে  দাঁড়িয়েছে তার সামনে। কিন্তু লক্ষ্য একটাই ছিল তার, পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট না করতে পারলে বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটবে না। আর সেই কাজ থেকে কেউ তাকে সরাতে পারেনি। 

রাহুলের দাদু পূর্ণচন্দ্র দাস বলেন, রাতে যখনই ঘুম ভাঙল দেখতাম রাহুল পড়ছে। আরও এগোতে হবে রাহুলকে। ডাক্তার হতেই হবে তাকে।

বন্ধ করুন