বিজেপির বিধায়করা ধীরে ধীরে দল ছাড়তে শুরু করেছেন। একুশের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই তা দেখা যাচ্ছিল। এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। সুমন কাঞ্জিলাল তিনদিন আগেই যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তবে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী এবার দলত্যাগের বিষয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর মতের অমিলের হওয়ার কারণেই দলবদল বলে তিনি দাবি করেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণীর।
বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ থেকে জিতেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এখন তিনি বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান। এবার তিনি সরাসরি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। রায়গঞ্জের গৌরিগ্রাম পঞ্চায়েতের একটি রাস্তার শিলান্যাসে যান তিনি। সেখানেই দলবদল ইস্যুতে মেদিনীপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন এই বিধায়ক। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক? এদিন সরাসরি তাঁর দলবদল নিয়ে দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি বলেন, ‘আপনারা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন, বিশ্বাস রেখেছিলেন। আর আমাকে বিধায়ক করে বিধানসভায় পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আমার দলের চয়নটা ঠিক ছিল না। বিজেপির বিধায়ক হয়েও যখন কাজ করছিলাম, তখন হেস্টিংসে দিলীপ ঘোষ আমাকে উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলেছিলেন। জেলার স্পিডের চেয়ে বেশি স্পিডে কাজ করা যাবে না। আর শুধু কাজ করলে আর মানুষকে পরিষেবা দিলে ভোটে জেতা যায় না। ভোটে জিততে হলে আন্দোলন করতে হবে। আমি সেদিনই বুঝে গিয়েছিলাম আমার চিন্তাধারার সঙ্গে এদের চিন্তাধারার মিল হবে না। তারপরেই আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলাম। আর তিনি একবারেই আমাকে আপন করে নিলেন। আর তাই আমারও কর্তব্য ওনার হাত শক্ত করব।’
বিজেপি বক্তব্য ঠিক কী? এই অভিযোগ নিয়ে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে দলের অন্দরে। তাই বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘একজন বিধায়কের প্রথম দায়বদ্ধতা তার এলাকার মানুষের উপর। তাঁর এলাকার অধিকাংশ মানুষ তাঁকে সমর্থন করেছিলেন তাই বিধায়ক হয়েছেন। তাই এই বিধায়ক জনগণের প্রতি প্রতারণা করেছেন এটা সহজেই বোঝা যায়। যদি বিন্দুমাত্র লজ্জা ও সম্মানবোধ থাকত তাহলে ওনার উচিত ছিল ওই দলের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে নতুন করে আবার নির্বাচন দাঁড়িয়ে ফিরে আসা। মানুষ কিন্তু বিজেপি হিসাব তাঁকে আর্শীবাদ করেছিলেন।’