লাইনে ছিল ফাটল। সেই ফাটলের ওপর দিয়েই ট্রেনটা চলে যেত, যদি না যুবক নিজের লাল জ্যাকেট উড়িয়ে লোকো পাইলটকে সতর্ক করতেন! ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবারে। গতকাল বিকেল ৪টে ৫০ মিনিট নাগাদ। জানা গিয়েছে, শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ডায়মন্ড হারবার এবং গুরুদাসনগরের মাঝে লালবাটি রেলগেটের কাছে লাইনে ফাটল ছিল। সেই ফাটলের ওপর দিয়ে গেলে ট্রেন বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারত। এই আবহে একদল যুবকের তৎপরতায় রক্ষা পায় ট্রেনটি। এদিকে লাইনে ফাটল থাকায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় এই রেলপথে। নাজেহাল হন যাত্রীরা। পরে সন্ধ্যা নাগাদ আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয় ওই রেললাইনে।
জানা গিয়েছে, একদল যুবকের চোখে ধরা পড়েছিল লাইনের ফাটল। এরপরই তাঁদের মধ্যে থেকে একজনের লাল জ্যাকেট খুলে তা তুলে নাড়তে থাকেন তাঁরা। ততক্ষণে তাঁদের দিকেই ধেয়ে আসছে শিয়ালদাগামী ট্রেনটি। সেই যুবকদের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে অল্পের জন্য রক্ষা পায় ট্রেনটি। বেঁচে যান কয়েকশো যাত্রী। এরই মাঝে একজন যুবক ছুটে যায় স্টেশন মাস্টারের কাছে। লাইনের ফাটলের কথা জানান তিনি। এদিকে গোটা কথা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেল আধিকারিকরা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেললাইন মেরামতির কাজ চলে।
মানোয়ার হালদার নামে এক যুবক এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা ফুটবল খেলে ফিরছিলাম সংগ্রামপুর থেকে। রেললাইন ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখি রেললাইন ভাঙা। এতে যে বিপদ ঘটতে পারে তা বুঝতে পারছিলাম। কোনও উপায় না দেখে, এক বন্ধুর লাল রঙের জ্যাকেট খুলে পতাকার মতো ওড়াতে শুরু করলাম। আমরা দলে মোট ৯ জন ছিলাম। আমাদের এক বন্ধুকে বললাম, স্টেশনে পৌঁছে রেললাইন ভাঙার খবর জানাতে। আমাদের লাল জ্যাকেট ওড়ানো সঙ্কেত দেখে চালক ট্রেন থামিয়ে দেন। স্টেশন মাস্টার-সহ অন্যরাও আসেন এখানে। না হলে একটা বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।'
এর আগে রেললাইনে ফাটলের জেরে হাওড়া শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছিল গত ৭ জানুয়ারি। হুগলির তারকেশ্বরে কৈকালা স্টেশনের কাছে রেললাইনে ফাটল লক্ষ্য করা যায়। এরপর এই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয় সাময়িকভাবে। পরে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় রেললাইন মেরামত করা হয় এবং ট্রেন চলাচল ফের শুরু হয়। তবে এই ঘটনার জেরে বহু ট্রেন দেরিতে চলে।