গত ১৭ জুন জলপাইগুড়ির রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল ১১ জনের। সেই ঘটনায় এবার রেলের কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল রেল। এই দুর্ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সাসপেন্ড করা হল ৩ রেল কর্মীকে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের রাঙাপানি স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট, রাঙাপানি এবং চটেরহাটের মধ্যেকার বিভাগের সিগন্যাল টেকনিশিয়ান এবং ঘাতক মালগাড়ির গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার দু’ঘণ্টা আগে থেকে সিগন্যাল অকেজো ছিল। তারজন্য ওই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে রেল।
আরও পড়ুন: আর কাগজের মেমো দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে না, কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনায় ঘুম ভাঙল রেলের
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনায় মালগাড়ির চালকের মৃত্যু হলেও বেঁচে গিয়েছিলেন সহকারী চালক। প্রথমে রেলের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা মালগাড়ি চালককে সিগন্যাল না মানার জন্য দায়ী করেছিলেন। তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। পরে বিষয়টি আরও তদন্ত করে আধিকারিকরা জানতে পারেন যে চালকের গাফিলতি ছিল না, সিগন্যালে ত্রুটি ছিল। রাঙাপানি স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট মালগাড়ি ও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকদের ৯ টি ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যাল বাইপাস করার জন্য মেমো জারি করেছিলেন।
তবে সেখানে ট্রেন থামানোর জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক ও সহকারী চালকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই সমস্ত কারণে ওই তিন জনকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে এবং বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এছাড়াও আহত হয়েছিলেন ৪০ জন। দুর্ঘটনার পরেই জখমদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের। চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চিকিৎসা করেন জখমদের। এছাড়াও অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে রক্তের ব্যবস্থা করেন। এদিকে, এই ঘটনার পরেই রেলের দিকে আঙুল ওঠে। পরে মালগাড়ি চালকের বিরুদ্ধে সিগন্যাল ভাঙার অভিযোগ তোলে রেল। যদিও চাপে পড়ে মৃত মালগাড়ি চালকের ওপর থেকে রেলের তরফে দায় সরিয়ে নেওয়া হয়।