একটি ট্রেনের কামরার উপরে উঠে গিয়েছে অন্য একটি ট্রেনের কামরা। সেখানে উদ্ধারকাজে ব্যস্ত প্রচুর আরপিএফ, পুলিশ থেকে শুরু করে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। আর আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে। শুক্রবার আদ্রা ইয়ার্ডে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। তারপরই নেটপাড়ায় এনিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই দাবি করেছেন এটা রেল দুর্ঘটনা। তবে সেটি আদৌও কি দুর্ঘটনা? রেলের তরফে সে বিষয়টি স্পষ্ট করা হল।
আরও পড়ুন: দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যাপক আলোড়ন ছড়াল, গাজীপুরে পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত
আসলে এদিন আদ্রা ইয়ার্ডে যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে সেটি সত্যিকারের কোনও রেল দুর্ঘটনা নয়। সেটি হল একটি ‘নকল রেল দুর্ঘটনা’। মূলত উদ্ধারকাজের মহড়ার জন্য এরকম ‘মক ড্রিল’- এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল রেলের পক্ষ থেকে। প্রকৃতপক্ষে দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে উদ্ধার কাজ চালাতে হবে? বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় কীভাবে রাখতে হবে? তাছাড়া কর্মীদের কাজে কোনও খামতি রয়েছে কি না? তার পর্যালোচনা করতেই এই মক ড্রিলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল রেলের পক্ষ থেকে। যদিও রেলের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, যে এটা নতুন কিছু নয়, সারা বছরই মক ড্রিলের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে যে কোনও মুহূর্তে রেল দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই উদ্ধারকাজে কোনও রকমের যাতে খামতি না থাকে তাই এই আয়োজন।
এদিন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট অরবিন্দ কুমারের নেতৃত্বে এই মক ড্রিলে উপস্থিত ছিলেন আরপিএফ এবং জিআরপি-র পাশাপাশি রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক ও কর্মীরা। অনেকেই আছেন যারা এখনও পর্যন্ত রেল দুর্ঘটনার কাজে হাত লাগানোর সুযোগ পাননি। এদিনের মহড়ার ফলে তাঁদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হয়।
মহড়ায় দেখা যাচ্ছে, এসি ট্রেনের একটি কামরা লাইনের পাশে উল্টে পড়ে রয়েছে। তার ওপর চেপে গিয়েছে আরেকটি ট্রেনের কামরা। দুটিই যাত্রী বোঝাই ট্রেন। তাতে অনেকেই নকলভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। গ্যাস কাটার দিয়ে কামরার জানলা কেটে তাদের বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিন প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে মহড়া চলে। দমকল এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরাও এখানে উপস্থিত ছিলেন। আদ্রার ডিআরএম সুমিত নারুলাও উপস্থিত ছিলেন। জানা যাচ্ছে, এদিন মহড়া চলাকালীন উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য আহত হয়েছেন। সুমিতা নারুলা জানান, এদিনের মহড়ার একটি রিপোর্ট কার্ড তৈরি করা হবে। সেক্ষেত্রে কোনও খামতি পাওয়া গেলে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।