স্থানীয়দের কাজ দিতে হবে। এই দাবিতে এখন বিভিন্ন রাজ্যেই চলছে প্রতিবাদ–আন্দোলন। আর এই দাবি থেকে বাদ গেল না পশ্চিমবঙ্গও। কারখানায় স্থানীয়দের নিয়োগের প্রশ্নে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্ত তেতে উঠেছে। বিষয়টি বিধানসভা ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। রাজনীতিতে বহিরাগত তত্ত্ব ইতিমধ্যেই শোরগোল ফেলেছে রাজ্য–রাজনীতিতে। এবার কর্মসংস্থান বিষয়েও বহিরাগত না নিয়ে স্থানীয়দের অগ্রাধিকারের দাবি উঠেছে।
জেলা শিল্প দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ১০,০০০-এর বেশি বেশি ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র, মাঝারি কারখানা আছে। তাতে দেড় লাখেরও বেশি কর্মী কাজ করেন। প্রচুর রাষ্ট্রায়ত্ত ও রাজ্য সরকারের কারখানা আছে। সেখানে, স্থায়ী ও অস্থায়ী পদে লক্ষাধিক কর্মী কাজ করেন। জেলায় সব মিলিয়ে ৬১২টি কারখানা বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে সিটু ও সিপিএমের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে নিজেদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। তাতে শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, প্রথম থেকেই বেশিরভাগ কারখানায় প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মী নিয়োগের কথা বলে বহিরাগতদেরই নিয়োগ করা হচ্ছে। অদক্ষ কর্মীদের তালিকায় বহিরাগতদের প্রাধান্যই বেশি। এবার সেই শূন্যপদেও বাইরের কর্মীদের অস্থায়ী নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর তাতেই আপত্তি।
এই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার–পর্বে অবশ্যই সরব হবেন বলে জানান রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত। তাঁর দাবি, ‘বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহণ করে নতুন কারখানা তৈরি করুক সরকার, এই আর্জিও আমরা জানাচ্ছি।’ সিপিএমের দাবি, বহিরাগতদের নিয়োগ করাটা কারখানা কর্তৃপক্ষ লাভজনক মনে করে। কারণ, দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে বহিরাগত কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ সেভাবে হয় না। সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার জানান, তাঁরা চান স্থানীয়দের নিয়োগের বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট নীতি তৈরি হোক।
তৃণমূল সূত্রেও দাবি, সম্প্রতি দুর্গাপুরে দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্থানীয়দের নিয়োগের বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে বিজেপির আসানসোল জেলা সহ–সভাপতি প্রমোদ পাঠকের অভিযোগ, সিপিএম বা তৃণমূল কোনওদিনই বহিরাগতদের নিয়োগ রুখতে সেভাবে আন্দোলন করেনি। এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিধানসভা ভোটের আগে সরব হবেন।