আবাসন চত্বরেই এক প্রাক্তন পুলিশকর্মীর মেয়ে ও তাঁর সঙ্গে থাকা আরও এক তরুণীকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল! উত্তর ২৪ পরগনার খড়দার এই ঘটনায যিনি মূল অভিযুক্ত, সেই ব্যক্তি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা এবং এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য!
যদিও এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবরাখবর সামনে আসতেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কার্যত ওই দুই তরুণীরই চরিত্র নিয়েই প্রশ্ন তোলেন! দাবি করেন, এই ঘটনার যে ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, তা আগে যাচাই করে দেখা দরকার।
প্রসঙ্গত, একথা সত্যি যে এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে (হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। এবং তারপর থেকেই ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
সূত্রের দাবি, অভিযোগকারিণী দুই তরুণী খড়দা পাতুলিয়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে একজন প্রাক্তন পুলিশকর্মীর মেয়ে। তিনি কলেজ পড়ুয়া। ঘটনার দিন তিনি স্কুটার নিয়ে আবাসনের ভিতরের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও এক তরুণী। যিনি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত এবং যাঁকে কলেজছাত্রী তরুণী 'দিদি' বলে সম্বোধন করেন বলে দাবি সূত্রের।
অভিযোগ, আবাসনের রাস্তা ধরে মূল ফটক পর্যন্ত যাওয়ার পরই তাঁদের স্কুটারের সামনে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে পড়েন স্থানীয় ওই তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর অনুগামীরা। তাঁরা দুই তরুণীকে জানান, নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে আর যাতায়াত করা যাবে না।
দুই তরুণী এর প্রতিবাদ করেন এবং জানান, তাঁরা বরাবর এই রাস্তা ব্যবহার করেই যাতায়াত করেন। তাহলে হঠাৎ করে এখন কেন তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে? অভিযোগ, এরপরই পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকরা তাঁদের হেনস্থা করেন, গায়ে হাত তোলেন এবং শ্লীলতাহানি করেন। এমনকী, তাঁদের নাকি গুলি করে খুন করারও হুমকি দেওয়া হয়!
এদিকে, ঝামেলার খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের সামনেও দুই তরুণীকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রহড়া থানার পুলিশও সেখানে পৌঁছয়। সূত্রের দাবি, এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন ওই দুই তরুণী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
যদিও অভিযুক্ত শাসকনেতা বলছেন, এই ঘটনার কোনও সত্যতা নেই। দুই তরুণীকে মারধর বা তাঁদের শ্লীলতাহানি করার কথাও অস্বীকার করেন অভিযুক্ত। তাঁর পালটা বক্তব্য, ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই না করে কিছু বলা যাবে না।
একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, পাড়ার লোকজনের কাছ থেকেই খোঁজ নিলেই নাকি জানা যাবে, রাত হলে ওই দুই তরুণী কোথায় যান, কাদের সঙ্গে মেশেন? এখন প্রশ্ন হল - দুই প্রাপ্তবয়স্ক তরুণী রাতে কোথায় যাচ্ছেন বা কাদের সঙ্গে মিশছেন, তা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতারই বা মাথাব্যথা কেন? এর উত্তর আপাতত অধরা।
যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি ওই দুই তরুণীকে 'বোঝাচ্ছিলেন' এবং 'বাইক দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে' চেয়েছিলেন!