পড়শি রাজ্য সিকিম থেকে দূর করে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের মেডিক্যাল ও বিপজ্জনক বর্জ্য। আর সেই আবর্জনা ফেলে যাওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে! এমনই অভিযোগ উঠেছে বলে দাবি করা হচ্ছে সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায়।
'দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন'-এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত কয়েক দিন ধরেই সিকিম থেকে দূর করে দেওয়া ওইসব বর্জ্য পদার্থ দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ফাঁসিদেওয়ার ফারাবাড়ির একটি ফাঁকা স্থানে ফেলা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যে জায়গাটিতে পড়শি রাজ্যের আবর্জনা জমা করা হচ্ছে, সেটি মোটেও কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড নয়। তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন এই মারাত্মক অনিয়ম ঘটে চলেছে।
গত সোমবার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও সেই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।
বিষয়টি সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরাও। তাঁদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, যে জমিটিতে সিকিমের ওই আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেটি ফাঁকা ছিল। হঠাৎ, কিছু লোক ট্রাকে করে আবর্জনা বোঝাই করে এনে সেখানে ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন!
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, এই ঘটনা পরিবেশ রক্ষা আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাছাড়া, মেডিক্যাল বর্জ্য এভাবে যেখানে-সেখানে ফেলা যায় না। তা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ভয়ের কারণ আরও রয়েছে। যেখানে এই আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ, সেই জায়গাটি যে শুধু লোকালয় লাগোয়া, তাই নয়। এর খুব কাছেই রয়েছে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল। সেক্ষেত্রে এই ধরনের বর্জ্য পদার্থের দ্বারা বন্যপ্রাণও আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পশু ও পক্ষীপ্রেমীরা।
এই প্রেক্ষাপটে আবর্জনা বোঝাই চারটি ট্রাক আটকে দেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ট্রাকচালকদের সাফ জানিয়ে দেন, ওই এলাকায় এসব আবর্জনা ফেলা যাবে না। ট্রাকচালকদের আবর্জনাবোঝাই ট্রাকগুলি সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেও বলা হয়।
অভিযোগ, এরপর ট্রাকচালকরাই উলটে বাসিন্দাদের ধমক-চমক দিতে শুরু করেন। যার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ বাধে। শেষমেশ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশের তরফ থেকে ওই চারটি ট্রাক বাজেয়াপ্ত করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে দাবি করা হয়েছে ওই খালি জমির মালিকই ট্রাকচালকদের সেখানে আবর্জনা ফেলতে বলেছেন। কিন্তু, আবর্জনা ফেলার জন্য তিনি কোনও প্রশাসনিক ছাড়পত্র নেননি!
পঞ্চায়েত প্রশাসন বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর কথা বললেও পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আবর্জনা ফেলা বন্ধ না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।