পশ্চিমবঙ্গে যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন ক্রমশ তাদের জাল বিস্তার করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, সেই তথ্য তো ছিলই। এবার সামনে এল এমন এক তথ্য, যা সারা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
সূত্রের দাবি, শুধু জামাত বা আনসারউল্লাহের মতো জঙ্গি সংগঠন নয়, ইতিমধ্য়েই এপার বাংলায় ডালপালা মেলার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা!
রবিবার জঙ্গি সন্দেহে ক্যানিং থেকে পাকড়াও করা হয়েছে জাভেদ আহমেদ মুন্সিকে। এখন জানা যাচ্ছে, এই জাভেদ যেমন-তেমন জঙ্গি নয়। সে রীতিমতো পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা একজন জিহাদি! যে সরাসরি পাক জঙ্গি সংগঠন লস্করের সঙ্গে যুক্ত। সূত্রের দাবি, নিজের জঙ্গি 'আকা'দের নির্দেশেই পাকিস্তান থেকে কাশ্মীর, কাশ্মীর থেকে পশ্চিমবঙ্গ পৌঁছয় সে। পরবর্তী গন্তব্য ছিল - সীমান্তের ওপার - বাংলাদেশ।
আরও জানা যাচ্ছে, জাভেদ আহমেদ মুন্সি শুধুমাত্র লস্করের সঙ্গেই যুক্ত নয়। তার সঙ্গে ভারতে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তেহরিক-উল-মুজাহিদিনেরও সম্পর্ক রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই সন্ত্রাসী আইইডি বা বিস্ফোরক তৈরিতে সিদ্ধহস্ত। চালাতে পারে নানা ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্র। সীমান্ত পেরিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অস্ত্র পাচার করা তার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।
গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, বিভিন্ন 'কাজে' ধৃত মুন্সির এই 'মুন্সিয়ানা' ব্যবহার করে বাংলাদেশের অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়া ছিল পাকিস্তানে বসে থাকা লস্করের মাথাদের মূল উদ্দেশ্য। তারাই জাভেদ আহমেদ মুন্সিকে করাচি-শ্রীনগর-বাংলা-ঢাকা রুটে অস্ত্র পাচারের নির্দেশ দিয়েছিল।
তবে, তার জন্য আগে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হওয়া দরকার। মনে করা হচ্ছে, সেই আলোচনা সারতেই এবার পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিল সে। যাতে সীমান্ত পেরিয়া বাংলাদেশ পৌঁছে পাক জঙ্গি নেতাদের বার্তা বাংলাদেশের কট্টর মৌলবাদীদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে এবং তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই সবকিছু ফাঁস হয়ে গেল। ধরা পড়ে গেল জাভেদ আহমেদ মুন্সি।
সূত্রের দাবি, জেরার মুখে ওই জঙ্গি জানিয়েছে, জাল পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে এর আগেও একাধিকবার বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তানে যাতায়াত করেছে সে। আর তাতেই চিন্তা বেড়েছে গোয়েন্দাদের। তাদের আশঙ্কা, বাংলাদেশে অশান্তির সুযোগ নিয়ে ভারতে নাশকতার ছক কষা হচ্ছে। এবং তার জন্য করাচি-শ্রীনগর-বাংলা-ঢাকা রুটে অস্ত্র পাচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে একের পর এক পাকিস্তানি জাহাজ নোঙর করতে শুরু করেছে। মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তান থেকে আসা কোনও পণ্যবাহী জাহাজে তল্লাশি করা যাবে না!
ভারতীয় গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, পণ্যের আড়ালে ওই জাহাজে করে আদতে অস্ত্র পাঠাচ্ছে পাকিস্তান। আগামী দিনে, বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের মদতে সেই অস্ত্র পৌঁছে যেতে পারে কট্টরপন্থীদের হাতে।