শিয়ালদা আদালতে নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে সিবিআইয়ের বাধার মুখে পড়েছিলেন বাবা-মা। এমনই দাবি করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের নির্যাতিতার চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী তড়িৎ ওঝা। রবিবার তিনি বলেছেন, ‘(গত ১৫ জানুয়ারি আমরা যখন শিয়ালদা কোর্টে পিটিশন দাখিল করতে যাচ্ছি), তখন সিবিআই কোর্টের যে পাবলিক প্রসিকিউটর (আছেন), তিনি বাধা দেন। (উনি বলেন যে) না, আমি আগে দেখব যে আমার মনের মতো হয়েছে কিনা লিখিত বক্তব্যটা। তবে আমরা অনুমতি দেব। তখন আমি বললাম যে লিখিত বক্তব্য পেশ করার আমার মৌলিক অধিকার আছে।’
সোমবারই আদালতে আবেদন দাখিল করা হবে
আর তিনি যেদিন সেই অভিযোগ করেন, সেদিন মালদায় ইংরেজবাজারে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। সেই সাক্ষাতের পরই পরিবারের আইনজীবী জানান, আরজি কর কাণ্ডে পুনরায় তদন্ত এবং পুনরায় বিচারের আর্জি জানিয়ে আদালতে মামলা করা হবে। সোমবারই সেই আবেদন দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী।
সঞ্জয়কে নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই, দাবি আইনজীবীর
সেইসঙ্গে পরিবারের আইনজীবী দাবি করেছেন, আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়কে নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। বরং ধর্ষণ ও খুনের কাণ্ডে আরও কারা জড়িত আছেন, তাঁদের যাতে খুঁজে বের করে সাজা দিতে হবে। উল্লেখ্য, আপাতত সঞ্জয়ের ফাঁসি চায়নি পরিবার। যদিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তরফে সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
তারইমধ্যে রবিবার নির্যাতিতার বাবা জানান, যাঁরা যাঁরা মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত, তাঁদের সকলকে তদন্তের আওতায় আনা হোক। করা হোক বিচার। প্রত্যেকের শাস্তি দেওয়া হোক। একা সঞ্জয়কে ফাঁসি দিলে ন্যায়বিচার মিলবে না। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে পুরো ঘটনায় অনেকে জড়িত আছেন। তাঁদের আড়াল জন্য কলকাতা পুলিশের তৎকালীন কমিশনারও চেষ্টা করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে অনড় নির্যাতিতার বাবা
সেইসঙ্গে রবিবার ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দাবি তোলেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হলেন মমতা। তিনি পুলিশমন্ত্রীও বটে। আর তাঁর মেয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ছিলেন। কর্মরত অবস্থায় মানুষের সেবা করার সময় তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। সেই ঘটনার দায় রাজ্য সরকার এড়াতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি কেন তুলছেন, সেটা শিয়ালদা আদালতের রায়ের কপিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে বলে দাবি করেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা।