সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই একের পর এক সম্পত্তির 'মালকিন' হয়েছেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সদ্য-প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী। মঙ্গলবার ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট)-এর তরফে এই প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, সন্দীপ ঘরণীর নামে অন্তত এমন দু'টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, যার কোনও রাজ্য সরকারি অনুমোদন নেই।
আর জি করে কোনও আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সেই তদন্ত করছে ইডি। মঙ্গলবার তাদের তরফে এই প্রসঙ্গেই একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয়েছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর ইডি-এর কলকাতা শাখার তরফে একসঙ্গে সাতটি সম্পত্তিতে অভিযান চালানো হয়। যার মধ্যে ছিল সন্দীপ ঘোষ এবং তাঁর একাধিক আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠের বসতবাড়ি।
প্রসঙ্গত, আর জি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই এবং এসিবি (অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো) যে এফআইআর দায়ের করেছে, তারই ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং ১৯৮৮ সালের দুর্নীতি দমন আইন অনুসারে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
ইডি-এর তদন্তকারীদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন ছাড়াই দু'টি স্থাবর সম্পত্তিতে মালিকানা কায়েম করেছিলেন সন্দীপের স্ত্রী ডা. সঙ্গীতা ঘোষ। বদলে ২০২১ সালে তাঁর স্বামী সন্দীপ ঘোষের তরফ থেকে ওই সম্পত্তি কেনার জন্য একটি 'পোস্ট ফ্যাক্টো অ্যাপ্রুভাল' দেওয়া হয়। যখন এই ঘটনা ঘটে তখনও আর জি করের অধ্যক্ষ পদে বহাল ছিলেন ডা. সন্দীপ ঘোষ। একই কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদে আসীন ছিলেন তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা।
ইডি-এর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় ঘোষ দম্পতির একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে তারা। উদ্ধার হওয়া অসংখ্য নথি ঘেঁটে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে একটি এবং কলকাতায় তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে 'ডাক্তারবাবু' ও তাঁর স্ত্রীর। এছাড়াও, কলকাতায় দু'টি বাড়ি রয়েছে তাঁদের। সেইসঙ্গে, তাঁদের মালিকানাধীন একটি খামারবাড়িরও সন্ধান মিলেছে।
ইডি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'তল্লাশি অভিযানের সময় এমন বহু নথি ও ডিজিট্যাল ডিভাইস পাওয়া গিয়েছে, যার সঙ্গে অপরাধের যোগ রয়েছে। এইসব নথিতে এমন একাধিক সম্পত্তির উল্লেখ রয়েছে, যেগুলি কিনতে অপরাধের আশ্রয় নেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, আর জি করে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই সন্দীপকে কাগঠড়ায় তুলেছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারই মধ্যে গত ২ অগস্ট আর্থিক দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। মঙ্গলবার তাঁকে আগামী ২৩ অগস্ট পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠায় আদালত। অন্তত, প্রাথমিকভাবে তেমনটাই মনে হচ্ছে।'