আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নেমেছেন। বিচারের দাবি তুলেছেন। স্লোগান উঠেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। তার মধ্যেই এবার একটা অভিনব প্রতিবাদের ঘটনা দেখা গেল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। কিছু দিন আগে এই রায়গঞ্জের ডাক্তারবাবু দেবব্রত রায় নিজের প্রেসক্রিপশনে লিখেছিলেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ এবার সেটা দেখা গেল শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণপত্রে। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রায় ৩৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে এখনও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক হয়নি। যার জেরে এখনও রফাসূত্র বের হয়নি। এমন আবহে এই অভিনব প্রতিবাদ তাও শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণপত্রে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। এখানের বাসিন্দা প্রতিমা দত্ত গত ৪ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রয়াত হয়েছেন। সোমবার তাঁর পারলৌকিক কাজ হবে এই রায়গঞ্জের বাড়িতে। তাই ছাপানো হয়েছে শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণপত্র। আর সেখানেই প্রতিমা দত্তের ছেলে শুভ্রজ্যোতি দত্ত ওই নিমন্ত্রণপত্রে লিখেছেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ বাড়ি থেকে এভাবেই প্রতিবাদ জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন: এত কম ফি এখানে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শন করতে এসে প্রশ্ন তুলল ন্যাকের দল
ইতিমধ্যেই এই নিমন্ত্রণপত্র পৌঁছে গিয়েছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। তাঁরা এই অভিনব নিমন্ত্রণপত্র দেখে অবাক হলেও কেউ অসম্মতি জ্ঞাপন করেননি বলেই দাবি ছেলে শুভ্রজ্যোতি দত্তের। ওই নিমন্ত্রণপত্রে স্পষ্ট করে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ লোগো–সহ প্রতিবাদের ছবি ছাপা হয়েছে। এভাবেই তিনি মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন। তাই শুভ্রজ্যোতি দত্ত বলেন, ‘আমার মা প্রতিমা দত্ত স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন দীর্ঘদিন। স্কুলটি নিজে হাতে করে গড়ে তুলেছিলেন। এটি বালিকা বিদ্যালয়। এখনও আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার বিচার মেলেনি। তাই আমি মায়ের কাজের সময় কার্ডের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছতে চাই। যাতে সবাই বিচারের দাবি তোলেন এবং দোষী শাস্তি পায়।’
শনিবারই স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দিদি হিসেবে এসেছেন তিনি। তাতে রফাসূত্র এখনও বের হয়নি। কিন্তু এবার শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণ কার্ডে এমন প্রতিবাদী দৃশ্য বেশ চমকপ্রদ। আর এই কার্ড দেখে অনেক সাধারণ মানুষ শুভ্রজ্যোতি দত্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাঁর মা টিভি দেখা, খবরের কাগজ পড়তেন। আর সকলকেই প্রতিবাদ করার সাহস জোগাতেন বলে দাবি ছেলে শুভ্রজ্যোতির। এখানের প্রতিবেশী তন্ময় চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘এমন কার্ড আগে কখনও দেখা যায়নি। আমি এই কার্ড পেয়ে শুভ্রজ্যোতিকে সমর্থন করেছি। কারণ এভাবেও প্রতিবাদ করা যায়।’